দেশজুড়ে শিশু নিখোঁজের বিভিন্ন তথ্য ও উৎকণ্ঠা নিয়ে সরগম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে শিশু নিখোঁজের স্ট্যাটাস ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব স্ট্যাটাস সত্য ভেবে অনেকেই আবার শেয়ার দিচ্ছেন নিজের প্রোফাইলে। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
তবে ফেসবুকে এসব গুজবে বিশ্বাস না করার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এগুলো শুধুই গুজব। যারা হারিয়েছে তারা ঘণ্টা কয়েক বাসায় ছিল না। আবার কোনো শিশু দূরে তাদের বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়েছিল।
পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজবে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। যে বা যারা এসব তথ্য সত্য বলে পোস্ট করছে তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার দিনভর ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তিগত আইডি থেকে শিশু-কিশোর হারানোর তথ্য ফেসবুকে ভাসতে থাকে। এর বেশিরভাগই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলাকেন্দ্রিক ফেসবুক আইডি থেকে ছড়ানো হয়।
৩ লাখ ৪১ হাজার ফলোয়ার ‘NTRCA শিক্ষক নিবন্ধন (প্রস্তুতি)’ পেজ থেকে রাতে লেখা হয়েছে, ‘ব্রেকিং নিউজ! গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৩৫টি বাচ্চা নিখোঁজ। সতর্ক থাকুন।’
দিনব্যাপী এসব পোস্টগুলোর স্ক্রিনশর্ট থেকে দেখা যায়, কিছু পোস্টে কেবল মাদরাসা ছাত্র নিখোঁজ হচ্ছে, আবার কিছু পোস্টে মুসলিম ছাত্র, কোথাও মেয়েদের কথা বলা হয়েছে। কোথাও স্থান বদলে ঢাকা, চট্টগ্রামের সঙ্গে অন্যান্য জেলার নামও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
দিনভর ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া পোস্টকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আসলে কিছুই জানেন না এ বিষয়ে; কে নিখোঁজ হলো, কখন ফিরে আসলো কিছুই বলতে পারেন না তারা।
যারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন বা বোন কিংবা বন্ধুর বোন বলে পোস্ট দিয়েছে তাদের কোনো নিকট আত্মীয় নিখোঁজ হয়নি। আসলে কেউ কেউ বেশ কয়েক ঘণ্টা নিখোঁজ থাকলেও তারা ফিরে এসেছে। ফিরে পাওয়ার বিষয়টি সত্যিকারের আত্মীয় স্বজনরা জানালেও যারা না বুঝে শেয়ার করেছেন তারা আর পরে ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট সরাননি। এগুলো ক্রমান্বয়ে ভাইরাল হতে থাকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম সেল বলছে, তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। যারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর পোস্ট নিশ্চিত না হয়ে বিশ্বাস করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করবেন।
ইএইচ