বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অংশ নেওয়া ৩২ দলের প্রত্যেকটিরই দুইটি করে ম্যাচ খেলা হয়েছে। সেই হিসেবে এখন একটি করে ম্যাচ বাকি আছে। আর শেষ ম্যাচেই ঝুলে আছে অনেক সমীকরণ।
কিন্তু মজার বিষয় হলো এই সময়ে এসে দুইটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে একই সময়ে। যে কারণে অনেককেই খেলা দেখতে গিয়ে পড়তে হবে বিপাকে। দর্শকদের বিপাকে ফেলা এই নিয়ম কেনো করেছে ফিফা, এর নেপথ্য কারণ কী?
জানতে হলে ফিরতে হবে ১৯৭৮ সালে। আর্জেন্টিনায় আয়োজিত সেই আসরে সেবার স্বাগতিক আর্জেন্টিনাকে সুবিধা করে দিতে তাদের খেলা ফেলা হয় সবার পরে। সেজন্য পরের পর্বে ওঠার জন্য কী করতে হবে, সেটা আগেই জানত তারা। সেবার পেরুর বিপক্ষে তাদের শেষ ম্যাচে জিততে হতো চার গোলের ব্যবধানে। আর্জেন্টিনা ম্যাচটা জিতেছিল ৬-০ গোলে, যে ম্যাচ নিয়ে আছে অনেক প্রশ্ন।
পরের বিশ্বকাপেই এমন একটা ঘটনা ঘটে, যে কারণে ফিফা শেষ পর্যন্ত গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ একই সময়ে শুরু করতে বাধ্য হয়। স্পেনের সেই আসরে একই গ্রুপে ছিল জার্মানি, অস্ট্রিয়া, আলজেরিয়া ও চিলি। আলজেরিয়ার জন্য সেই বিশ্বকাপ ছিল স্বপ্নপূরণের মতো। উদ্বোধনী দিনেই তারা ফেবারিট জার্মানিকে হারিয়ে ২-১ গোলে। কোনো ইউরোপিয়ান দলের বিপক্ষে আফ্রিকার কোনো দলের বিশ্বকাপে সেটা ছিল প্রথম জয়, আরব কোনো দেশের বিশ্বকাপে প্রথম জয়ও বটে।
এই জয়ের পরের ম্যাচেই অস্ট্রিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরে বসে। যদিও চিলিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে আবার ফিরে আসে তারা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা ছিল জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার। সমীকরণ এমন দাঁড়ায়, জার্মানি যদি এক গোলের ব্যবধানে জেতে তাহলে তারা ও অস্ট্রিয়া চলে যাবে পরের পর্বে। আর যদি তিন গোলের বেশি ব্যবধানে জেতে তাহলে অস্ট্রিয়া বাদ পড়বে। আর তিন গোলে জিতলে অস্ট্রিয়াও আলজেরিয়ার মধ্যে যে দল বেশি গোল করবে তারা যাবে। আর জার্মানি হারলে বা ড্র করলেই বাদ।
সেই ম্যাচের শুরুতেই একটি গোল দেয় জার্মানি। এরপর পুরো সময় দুই দলের কেউ আর গোল করার কোনো চেষ্টাই করেনি। বোঝাই যাচ্ছিল, দুই দল এই ফলটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছে।
এই ম্যাচের পর তুমুল সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। গিজনের কেলেংকারিখ্যাত সেই ম্যাচের পর নতুন করে নিয়ম নিয়ে ভাবে ফিফা। পরের বিশ্বকাপ থেকেই গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ একই সময়ে চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
কেএস