নিজ দেশ থেকে কাতারকে নিরাপদ বলছেন পশ্চিমা নারীরা

ক্রীড়া ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ০৩:১০ পিএম

বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগ থেকেই কাতারকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের বিষেদাগার ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশ্বকাপ শুরুর পরও আসরে অংশ নেয়া ইউরোপের ১১ দেশের অধিনায়করা সোচ্চার ছিলেন কাতার নীতি নিয়ে। পশ্চিমা মিডিয়ার রোষানলেও পড়তে হয়েছে কাতারকে।

বিশেষ করে পশ্চিমা মিডিয়া কাতারের মানবাধিকার পরিস্থিতি, নারীর পোশাকের স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছে, প্রকাশ করা হয়েছে নানা রকম শঙ্কা। বিশ্বকাপ শুরুর ক্ষণেও দর্শকদের মধ্যে কাতার নিয়ে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করেছে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে যতই দিন যাচ্ছে আস্তে আস্তে সেই ধারণার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।

সম্প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো থেকে আসা নারী দর্শকদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স। যেখানে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো থেকে আসা নারীরা নিজেদের দেশ থেকেও কাতারকে নিরাপদ বলে অভিহিত করেছেন।

ইংল্যান্ড থেকে খেলা দেখতে আসা এলি মলোসন কাতারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বলেন, আমি মনে করেছিলাম কাতার মেয়েদের জন্য খুবই ভয়ংকর একটা জায়গা। আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু এখানে আসার পর যত দিন যাচ্ছে মনে হচ্ছে আমি যা ভেবেছি, সেটি ঠিক ছিল না। নারী হিসেবে কাতারে ঘুরে আমি নিরাপদবোধ করেছি।

মলোসন নিজে ‘হার গেম টু’ নামের একটি নারীবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যে সংগঠন ফুটবলে নারী দর্শকদের অংশগ্রহণ নিয়ে কাজ করে থাকে। তিনি জানিয়েছেন, কাতার আসার আগে তার বাবা এতটাই অস্বস্তিতে ছিলেন যে তিনি শেষ পর্যন্ত এখানে তার সঙ্গী হয়েছেন।

মাঠে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটাকেও ইতিবাচক বিবেচনা করে মলোসন বলেন, মাঠে যেকোনো ধরনের অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটা ভালো হয়েছে। এতে গ্যালারির পরিবেশ ভালো থাকছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে হইহুল্লোড় পছন্দ করি। উদ্দামতায় আমার আপত্তি নেই। তবে কাতারের স্টেডিয়ামগুলোর পরিবেশ অনেক ভালো, শান্ত। বেশ “পারিবারিক”।

২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন নারী দর্শক আরিয়ানা গোল্ডও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রায় একই কথা বলেছেন, কাতারে আসার আগে আমি ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম এখানকার পরিবেশটা খুবই কট্টর হবে। ভেবেছিলাম এই দেশটা খালি পুরুষদের, মেয়েদের জন্য অস্বস্তিকর। কিন্তু না, আমি এই দেশে খুব আনন্দে আছি, স্বস্তিতে আছি।

ইংল্যান্ডের শেফিল্ড থেকে আসা ৩৩ বছর বয়সী এমা স্মিথও গলা মিলিয়েছেন মলোসন ও আরিয়ানার সঙ্গে, আমি এখানে খুবই নিরাপদবোধ করছি। কোনো সমস্যা নেই। অ্যালকোহল নিষিদ্ধ থাকাটা বরং নারীদের জন্য অনেক নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছে।

লুসাইল স্টেডিয়ামে হাজার হাজার ব্রাজিলিয়ান ভক্তের মাঝখানে বসেছিলেন কুয়েতি ফুটবল ভক্ত হনুফ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, কাতার বিশ্বকে দেখিয়েছে যে অ্যালকোহল ছাড়াই ফুটবল উপভোগ করা যায় এবং নারীরা তাদের নিরাপত্তার জন্য ভয় না পেয়ে এটি উপভোগ করতে পারে।

এসএম