ম্যারাডোনা স্বর্গ থেকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন: মেসি

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২২, ০৪:৪৫ পিএম

সেই ৫ বছর বয়সে অখ্যাত গ্রান্দোলি দিয়ে ফুটবলে হাতেখড়ি লিওনেল মেসির। সেই থেকে কেটে গেছে তিন দশক। এরমধ্যে ফুটবল আকাশের মহীরুহ হয়েছেন। জিতেছেন ব্যক্তিগত এবং দলীয় অনেক অনেক পুরস্কার। তবুও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ যেন পাওয়া হচ্ছিল না।

এক পর্যায়ে তো বলেই বসলেন, ফুটবলের ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের ব্যালন ডি’অরও ছুঁড়ে ফেলতে পারেন, যদি মেলে কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি। অবশেষে জিতলেন এবার কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে এসে। কাতারে মেসিরা যখন সোনালী ট্রফি ছুঁয়েছেন, আকাশের কোনো এক তারা হয়ে সেই দৃশ্য দেখছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তি দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা।

যার হাত ধরেই কিনা ১৯৮৬ সালে সর্বশেষবার আর্জেন্টিনা জিতেছিল ফিফা বিশ্বকাপের ট্রফি। এই ম্যারাডোনা ছিলেন তার অনুজ ফুটবলারদের সবচেয়ে পাগলাটে সমর্থক। প্রতিটি বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অন্যসব সাফল্য যিনি ছিলেন সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত ব্যক্তি। অথচ দলের সেরা সাফল্য দেখা হয়নি ম্যারাডোনার। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তলোকে।

মর্ত্যলোকে না থাকলেও স্বর্গ থেকেই দলকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন ম্যারাডোনা, এমনটাই জানিয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপ জেতার পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন মেসি। যেখানে তিনি ম্যারাডোনার অনুপ্রেরণা জোগানোর বিষয় ছাড়াও তুলে এনেছেন নিজের ফুটবল জার্নিও। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে মেসির বলা সব কথাই তুলে ধরা হলো।

‘গ্রান্দোলি থেকে কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রায় ৩০ বছর কেটে গেছে। প্রায় তিন দশকের এই সময়ে ফুটবল আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে, কিছু দুঃখও দিয়েছে। সবসময়ই আমার স্বপ্ন ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আমি কখনো চেষ্টা করা থামাইনি, এমনকি এটাও জানতাম যে এটা কখনো নাও পেতে পারি।

এই যে বিশ্বকাপটা আমরা জিতেছি, এটা তাদের জন্যও, যারা আগের বিশ্বকাপগুলোতে চেষ্টা করেও এটা জেতেনি। যেমন ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলে সবারই এটা প্রাপ্য ছিল, কারণ সবাই শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে এবং কঠিন পরিশ্রম করেছে। তারাও এটা সেভাবে পেতে চেয়েছে, যেভাবে আমি চেয়েছি। সেটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। যদিও শেষটা ভালো হয়নি।

(ট্রফিটা) ডিয়েগোর (মারাদোনার) জন্যও, যিনি স্বর্গ থেকে আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। এই সাফল্য তাদের সকলের জন্য, যারা সবসময় ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে জাতীয় দলের পাশে থেকেছে, আমাদের চেষ্টা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে, এমনকি যখন সবকিছু চাওয়া অনুযায়ী হয়নি তখনও…আর অবশ্যই কোচিং স্টাফ এবং জাতীয় দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য, যারা আমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে দিনরাত কাজ করেছেন।

সবসময় স্বপ্ন ছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার। ব্যর্থতা অনেক সময় যাত্রা এবং শেখার অংশ। হতাশা, ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্য পাওয়া অসম্ভব। হৃদয় থেকে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ! চলো আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাই।’

এবি