বিপিএল

কার হাতে উঠবে শিরোপা, ফাইনালে হারের রেকর্ড নেই কুমিল্লার

ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০৫:৩৮ পিএম

আগামীকালই পর্দা নামছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরের। ফাইনালে আগামীকাল সিলেট স্ট্রাইকার্সের মুখোমুখি হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলে এ নিয়ে চারবার ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টেরিয়ান্স।ফাইনালে কুমিল্লা মানেই হলো চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে বাড়ি ফেরা।

এখন পর্যন্ত তিনবার এই দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছে দলটি। নামের শেষেই যাদের বিজয়ী পদবী; চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তো তাদেরই মানিয়ে যায়। ফাইনালে জয়ের এই রেকর্ডকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ আসছে কুমিল্লার সামনে। আগামীকাল বিপিএলের নবম আসরের ট্রফি জিতলেই নিজেদের রেকর্ডকে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের পথচলা শুরু ২০১২ সাল থেকে।

কুমিল্লার অভিষেক তারও দুই আসর আর তিন বছর পরে। এরপর থেকে পেছনের সাত আসরে খেলেছে দলটি, তারমধ্যে এবারেরটা নিয়ে ফাইনালে উঠেছে চারবার। আগের তিন ফাইনালেই চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরেছে তারা।

২০১৫ সালে অভিষেক আসরেই বাজিমাত। আইকন প্লেয়ারের লটারিতে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পেয়েছিল কুমিল্লা। সঙ্গে ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, আবু জায়েদ রাহী, মারলন স্যামুয়েলস, আন্দ্রে রাসেলদের নিয়ে গড়ে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি।

ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে হার দিয়ে বিপিএল শুরু করে, তবে এরপরই নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে পরের ৯ ম্যাচের ৭টিতে জিতে। কোয়ালিফায়ারে রংপুরকে হারিয়ে খেলে ফাইনাল। সেই স্নায়ুক্ষয়ী ফাইনালে কুমিল্লা ৩ উইকেটে হারায় বরিশাল বুলসকে। নিজেদের খেলা প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন দল তারা। পরের শিরোপার জন্য অবশ্য কুমিল্লাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে তিন আসর।

 ২০১৭-১৮ মৌসুমে ফাইনালের খুব কাছে গিয়েও খেলা হয়নি তাদের। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুরের বিপক্ষে তাদের ম্যাচে বাগড়া দেয় বৃষ্টি। প্রথম দিন খেলা হয় মোটে ৭ ওভার, বাইলজ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে কোয়ালিফায়ার বা এলিমিনেটরের ম্যাচ শেষ না হলে গ্রুপ পর্বে শ্রেয়তর অবস্থানে থাকা দল চলে যেত পরের ধাপে। সে হিসেবে কুমিল্লাই খেলত ফাইনাল। তবে তা না করে খেলাটা গড়ায় পরের দিন, সেখানে হেরে যায় কুমিল্লা। সে আক্ষেপটা কুমিল্লা ঘোচায় পরের বছরই। তামিম ইকবালের দল বেশ দাপট নিয়েই পার হয় গ্রুপ পর্ব। কোয়ালিফায়ারে রংপুরকে হারিয়ে নাম লেখায় ফাইনালে।

সেখানে তামিম ইকবালের দাপুটে সেঞ্চুরিতে ভর করে ঘরে তোলে দ্বিতীয় শিরোপা। নিজেদের তৃতীয় এবং শেষ শিরোপা কুমিল্লা জিতেছে গেল বছর। সেবারও গ্রুপ পর্ব পেরোয় সেরা দুইয়ের একটি দল হয়ে। এরপর প্রথম কোয়ালিফায়ারে বরিশালের কাছে হেরে বসে ১০ রানে। তবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে পা রাখে ফাইনালে। ফাইনালে নেয় প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারের বদলা, শেষ ওভারের নাটকে ১ রানে হারায় সাকিব আল হাসানের বরিশালকে।

জিতে নেয় নিজেদের ইতিহাসের তৃতীয় শিরোপা। গ্রুপ পর্বে সেরা দুইয়ের একটি দল হয়ে কোয়ালিফায়ার খেলার অভ্যাসটা এবারও ধরে রেখেছে কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের দল। তবে এবারের শুরুটা ভালো হয়নি মোটেও। টানা তিন ম্যাচ হেরে কুমিল্লা যে চলে গিয়েছিল খাদের কিনারেই! সেখান থেকে ফিরে এসেছে দলটি, চ্যাম্পিয়নদের যেমন করে ফিরতে হয়। এরপর একে একে দশ ম্যাচ জিতেছে। শেষ চারে এসেছে দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে। কোয়ালিফায়ারে গত রবিবার হারিয়েছে সিলেটকে।

চতুর্থবারের মতো খেলছে ফাইনাল। ইতিহাস অবশ্য কুমিল্লার বিপক্ষেও কথা বলছে খানিকটা। এবারের কুমিল্লার সঙ্গে মিল গেল আসরের ফরচুন বরিশালের। টানা সাত ম্যাচ জিতে, বিপিএল রেকর্ড গড়ে সাকিবের দল সেবার খেলেছিল ফাইনালে। তবে শেষমেশ শিরোপাটা ছুঁতে পারেনি দলটি।

টানা সাত জয়ের পর ‘ল অব এভারেজ’ হয়ে হারটা পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল ফাইনালে। এবারের কুমিল্লাও ফাইনালে এসেছে বরিশালের সেই রেকর্ড ভেঙেই। টানা দশ জয়ের পর খেলবে ফাইনালে। বরিশালের মতো সেই ‘ল অব এভারেজ’ হার এবারও ফাইনালে কুমিল্লার পথ আগলে দাঁড়াবে না তো।

এআরএস