বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পাঁচ বছরপূর্তি

রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরার আকুতি

কক্সবাজার প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২২, ১২:৩৮ এএম

গত ২৫ আগস্ট ছিল রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস। ২০১৭ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন মিয়ানমারের কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। শরণার্থী জীবনের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তারা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের খোলা মাঠে সমাবেশ করেছেন।

সমাবেশে গণহত্যা দিবসে স্বদেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে মোনাজাত করেন রোহিঙ্গারা। এতে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুরা উপস্থিত ছিল। সমাবেশে শিশুদের হাতে হাতে নিজ দেশ মিয়ানমারের পতাকা দেখা গেছে।

ফেস্টুনে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট টু ব্যাক হোম’ লেখা ছিল। রোহিঙ্গা শিশুরা জানায়, তারা নিজের দেশে ফিরে যেতে চায়, সেখানে খেলতে চায়, পড়তে চায়। আবদুল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা শিশু বলে, সম্মান ও মর্যাদার সাথে নিজ মাতৃভূমি    মিয়ানমারে ফিরতে চাই আমরা।

এদেশের মানুষ যে পরিমাণ আমাদের ভালোবাসা দিয়েছে, সেটা আমরা কোনো দিন ভুলতে পারব না। আমরা নিজ দেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। উম্মে সালমা বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই। পশু-পাখির ঘর থাকলেও আমাদের নিজস্ব কোনো ঘর নেই।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, প্রত্যাবাসন থমকে গেছে। কারণ মিয়ানমার তাদের ফেরত নিতে চায় না। মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে জোরালোভাবে। রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার জুবায়ের বলেন, দিনটি আমাদের জন্য একটি কালো দিন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের এই দিনে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অগ্নিসংযোগ শুরু করে। সেদিন তারা অনেক মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছিল। অসংখ্য মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়া করা হয়। আমরা এক কঠিন অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছি।

রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার নুরুল আমিন বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আমরা যুগযুগ ধরে এখানে অবস্থান করে বাংলাদেশের বোঝা হতে চাই না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি জানাই, যেন রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যেগ নেয়া হয়। সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, ক্যাম্পে কিছু সংঘাত সংঘর্ষ তাদের জীবনকে অতিষ্ট করছে।

এদিকে সমাবেশ শেষে আয়োজিত বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেয়া রোহিঙ্গারা তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের বিচার ও নিজ দেশে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। একই সাথে তাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান তারা।