উপমহাদেশের প্রখ্যাত নায়িকা ববিতা বেশ কয়েক মাস ধরেই কানাডা ও আমেরিকায় অবস্থান করছেন। কানাডায় যখন তিনি যান, তখন তিনি তার একমাত্র ছেলে অনিকের সঙ্গেই থাকেন। আবার যখন আমেরিকায় থাকেন, তখন তার ভাইয়ের সঙ্গেই সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরার প্রবল শখ ছিল ববিতার। সময়-সুযোগ পেলেই তিনি ভাইদের সঙ্গে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেন। ছোটবেলার সেই অভ্যাস এখনো রয়ে গেছে তার। কানাডায় গেলে তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এবং আমেরিকায় গেলে ভাইদের সঙ্গে নিয়ে মাছ ধরতে বেড়িয়ে পড়েন।
ববিতা জানান, এরইমধ্যে তিনি কানাডা ও আমেরিকায় মাছ ধরতে গিয়ে বড়শি দিয়ে সান ফিশ ও বাজ ফিশ ধরেছেন। এ মুহূর্তে ববিতা আমেরিকায় আছেন। সেখানে ভাইয়ের সঙ্গেই সময় কাটছে এবং মাছ ধরছেন অবসরে।
ববিতা বলেন, ‘যখন আমেরিকায় থাকি, তখন ভাই, ভাইদের বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়েই মাছ ধরতে যাই। কানাডায় থাকলে অনিকও সময় দেয়ার চেষ্টা করে। মাছ ধরি। সত্যি বলতে আমাদের ভাইবোন ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে ভালোবাসি। এ-বিষয়ক কথা আসলে বলে শেষ করা যাবে না। মাছ ধরার বিষয়টি আমি দারুণ উপভোগ করি। এবারও কানাডা-আমেরিকায় মাছ ধরেছি। সময়টা দারুণ কেটেছে।’
ববিতাকে দীর্ঘদিন নতুন কোনো সিনেমায় দেখা যাচ্ছে না। নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয়েরও খোঁজ-খবর নেই। আপাতত নতুন কোনো সিনেমায় কাজ করার ব্যাপারেও কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি। দেশে ফিরলে নতুন সিনেমায় অভিনয় করবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানালেন তিনি। ববিতাকে সর্বশেষ নারগিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ সিনেমায় অভিনয়ে দেখা যায়।
অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাতে তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি নায়িকা হিসেবে ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ববিতার এক বিশাল পরিচিত এবং গ্রহণযোগ্যতা গড়ে ওঠে।
ববিতা অভিনীত এই চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে এবং ১৯৭৪ সালে শিকাগো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে ‘বেস্ট ফিল্ম’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়। ১৯৭৪ সালে কলকাতায় ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে তিনটি ক্যাটেগরিতে পুরস্কার লাভ করে।
নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে ববিতা প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। পরপর তিনি মোহসীনের ‘বাদী থেকে বেগম’ এবং আমজাদ হোসেনের ‘নয়ন মনি’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্যও একই সম্মাননায় ভূষিত হন। টানা তিনবছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে তিনি হ্যাট্রিক করেন।
গুণী অভিনেত্রী ববিতা পরবর্তী সময়ে ‘পোকা মাকড়ের ঘর বসতি’, ‘রামের সুমতি’ এবং ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্যও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। নায়িকা হিসেবে ববিতা প্রায় দেড় শত সিনেমাতে অভিনয় করেছেন এবং সব মিলিয়ে প্রায় ২৯০টি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।