যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের সুদিন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২, ০২:০৯ এএম

পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের সুদিন যাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এ দেশটির ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি হারে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

একই সময়ে দেশটিতে ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। চীনের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪০ শতাংশ। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করে বাংলাদেশ ৫৭১ কোটি (৫.৭১ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। দেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে) ৫৪ হাজার ২৪৫ কোটি টাকার সমান। যা  ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

জানুয়ারি-জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৪০ শতাংশ। এ সময় চীন রপ্তানি করেছে এক হাজার ২৭৯ কোটি (১২.৭৯ বিলিয়ন) ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। আলোচিত সময়ে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি  ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়ে রপ্তানি পৌঁছেছে এক হাজার ৯১ কোটি (১০.৯১ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। অন্যান্য শীর্ষ দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, ভারত, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং পাকিস্তানের পোশাক রপ্তানি একই সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বাড়ার ফলে খুচরা বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় আরও বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি, ফেডের হার বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে সেটি ভাবনার বিষয়।

তিনি জানান, বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানি আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল, ফলে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতা বজায় রাখতে পারে। তবে, পরবর্তীতে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুচরা বিক্রয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শংকায় ক্রেতারা সতর্ক অবস্থানে আছেন বলে জানান তরুণ উদ্যোক্তা ‘ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড’-এর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি সবশেষ তথ্য বলছে, নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) দেশের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। দুই মাসে মোট রপ্তানি হয়েছে ৮৫৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। গেল দুই মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭১১ কোটি ২৬ ডলারের, এই খাতে প্রবৃদ্ধি এসেছে ২৬ শতাংশ। এ ছাড়া জুলাই-আগস্ট সময়ে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ শতাংশ বেশি।