সালমান শাহকে ঘিরে চিত্রলেখার স্মৃতিচারণ

বিনোদন প্রতিবেদক প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২২, ০১:৫১ এএম

বাংলাদেশের সিনেমার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র চিত্রনায়ক সালমান শাহ। মৃত্যুর ২৬ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো বিশেষ দিবস ছাড়াই তাকে নিয়ে তার ভক্ত দর্শক, সহশিল্পী, প্রযোজক, পরিচালকরা প্রায়ই আড্ডায় মেতে উঠেন। বলা যায় বাংলাদেশের আনাচে কানাচে প্রতিদিনই তাকে নিয়ে নানান আলোচনা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে মৃত্যুর পর আর কোনো নায়ককে নিয়ে এমন আলোচনা হতে দেখা যায়না। নাটকের ও সিনেমার নন্দিত অভিনেত্রী চিত্রলেখা গুহর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ছিলো সালমান শাহর সঙ্গে। অর্থাৎ নাসির খান পরিচালিত ‘স্বপ্নের নায়ক’ সিনেমাতে তিনি সালমান শাহর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমাটির শুটিং হয়েছিল ১৯৯৬ সালে।

সালমান শাহর সঙ্গে স্মৃতিচারণা প্রসঙ্গে চিত্রলেখা গুহ বলেন, ‘সালমান শাহর আসলে কার ভালোবাসার মানুষ ছিল না। সবাই তাকে ভীষণ ভালোবাসত। আমার একটি সিনেমাতেই তার সঙ্গে অভিনয় করার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেটি হলো স্বপ্নের নায়ক। তো প্রথম দিন যখন শুটিং করতে গেলাম, মেকাপরুমে আমি মেকাপ নিচ্ছিলাম।

মেকাপ রুমে ডুকেই দিদি বলে যেভাবে ডাক দিয়েছিল তা এখনো যেন কানে ভাসে। সেই ডাকের মধ্যে শ্রদ্ধা ছিল, ভালোবাসাও ছিল। তো শুটিং শুরুর পর মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দেয়া হলো। একজন প্রোডাকসন বয় আমার কাছে এসে বলল যে ইমন (সালমান শাহর ডাকনাম) স্যার আপনাকে সালাম দিয়েছে। তো আমি বললাম, ওয়ালাইকুম আসসলাম।

তারপর সে আবার বলল, স্যার আপনাকে ডাকছেন। গেলাম ইমনের কাছে। গিয়ে দেখি এক টেবিল ভর্তি খাবার এবং ইমন আমাকে বলল-এরপর থেকে আমার সাথে তোমার যতোদিন শুটিং থাকবে দিদি-তুমি আমার সাথে এখানে দুপুরে খাবে। ঠিক তাই হলো। যেহেতু আমি নাটকের শিল্পী ছিলাম। সিনেমার অনেক কিছুই বুঝতাম না, আমাকে সালমানই বুঝিয়ে দিতো।

বলত দিদি, এখন শুধু পায়ের কাজ-পায়ের অভিনয়টাই করে যাও, মুখের এক্সপ্রেসন লাগবে না। তো সেই ইমনকে হারালাম আমরা অকালে। তার সেই শূন্যতা আজও পূরণ হয়নি, হবেও না। বরং তার জনপ্রিয়তা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। মৃত্যুর এতটা বছর পরেও সালমান যে দর্শকের হূদয়ে বেঁচে আছে, এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আর কোনো শিল্পীর ক্ষেত্রে নেই।’

চিত্রলেখা গুহ’ সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, তিনি আমেরিকায় থাকেন। তিনি বাংলাদেশেই আছেন এবং নিয়মিত অভিনয় করছেন। বর্তমানে তিনি হাসান জাহাঙ্গীরের ‘ফ্যামিলি ডিসট্যান্স’, সাজ্জাদ সুমনের ‘মাশরাফি জুনিয়র’, সোহাগ কাজীর ‘বউ বিরোধ’, বিজয় জানার ‘বালিঘর’ ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।

এছাড়া তিনি এরই মধ্যে অনিরুদ্ধ রাসেলের ‘জামদানি’ সিনেমার কাজ শুরু করেছেন। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা শেখ নিয়াত আলী’র ‘অন্য জীবন’। চট্টগ্রামের ‘অঙ্গন থিয়েটার’-এ মিলন চৌধুরীর রচনা  ও নির্দেশনায় ‘অভ্যন্তরীন খেলাধূলা’ নাটকে তার প্রথম অভিনয় করা। 

উল্লেখ্য, সালমান শাহ ও চিত্রলেখা গুহ অভিনীত ‘স্বপ্নের নায়ক’ সিনেমাটি ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই মুক্তি পায়।