দল ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলের করণীয়, জেলা উপজেলা পর্যায়ে রাজনীতি জোরদার, বৈশ্বিক সংকটে করণীয় ও বিএনপির সরকার বিরোধী আন্দোলন মোকাবিলায় নিজেদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে আজ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বসবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সভাটি শুরু হবে বিকেল ৪টায়। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত রোডম্যাপ নির্ধারণ করবেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, উত্তপ্ত দেশের রাজনীতি। বিএনপির সমাবেশে লাঠিসোঠা নিয়ে অংশগ্রহণ করছে দলটির নেতাকর্মীরা। সমাবেশে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করছে তারা। সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির কর্মকাণ্ড ভালোভাবে নিচ্ছে না আ.লীগ। এমন অবস্থায় মাঠের রাজনীতিতে দলটির নেতাকর্মীদের করণীয় নির্ধারণ করতে আজ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বসবে আ.লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। এবার কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় থাকছে ১১টি অ্যাজেন্ডা।
অ্যাজেন্ডা গুলো হলো— শোক প্রস্তাব পাঠ, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস, ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস, ২৭ নভেম্বর শহীদ ডা. মিলন দিবস, ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, আ.লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল, দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও বিবিধ।
বৈঠকে দলের জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের পাশাপাশি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, ঘোষণাপত্র, দপ্তর, প্রচার-প্রকাশনা, স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা, মঞ্চ, গঠনতন্ত্র, সাংস্কৃতিক, খাদ্য ও স্বাস্থ্য-বিষয়ক উপকমিটি গঠন করে দিতে পারেন আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আ.লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, নির্ধারিত অ্যাজেন্ডার বাইরে একগুচ্ছ বিষয় উঠে আসবে আজকের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায়।
বিশেষ করে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে দলগতভাবে আ.লীগের করণীয় কি! সমাবেশের বিষয়টি আ.লীগ কি ভাবে দেখবে— সে বিষয়ে দলীয় সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করবে দলটির শীর্ষ নেতারা। সেখান থেকে আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কি নির্দেশনা দেবেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আপাতত সে দিকেই দৃষ্টি রাখছেন। বৈঠকে উঠে আসতে পারে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে রাজনৈতিক দলটির বিষয়ও।
অভিযোগ আছে— এ দল গঠনের পেছনে কাজ করছেন জামায়াতের থিংকট্যাঙ্ক ও নীতিনির্ধারকরা। ফলে আ.লীগের বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। কার্যনির্বাহী সংসদের সভা থেকে নির্ধারণ করা হবে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ। এ সম্মেলনের আগে যা যা করণীয় তা নিয়ে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেবেন আ.লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নির্ধারণ করে দিতে পারেন ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আ.লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আ.লীগ ও মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের তারিখ।
জানতে চাইলে আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম আমার সংবাদকে বলেন, ‘১১টি অ্যাজেন্ডা নিয়ে এবারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পর এই বৈঠকে অ্যাজেন্ডার বাইরে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে কথা। দল ও সহযোগী সংগঠনের ভেতর-বাইরের বিভন্ন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে বিষয় নিয়ে কথা হবে। সব মিলে দীর্ঘদিন পর এই বৈঠককে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নেত্রী (আ.লীগ সভাপতি) আমাদের নির্দেশনা দেবেন।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ‘প্রতিবার কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এবারও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। আমাদের জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণসহ নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পরে। পাশাপাশি সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসবে।
তিনি আরও বলেন, সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হতে পারে।’