সৈয়দপুর রেলওয়ের জমি

অবৈধ বহুতল ভবন নির্মাণের হিড়িক

ওয়ালিউর রহমান রতন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২২, ১২:৫০ এএম

সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। একইসাথে একাধিক বিল্ডিং তৈরির কাজ চলছে মহাসমারোহে। শহরের প্রধান সড়কে প্রকাশ্যেই করা হচ্ছে এসব নির্মাণকাজ। কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই এই কর্মযজ্ঞ চললেও নির্বিকার রেলওয়ে প্রশাসনসহ পৌর কর্তৃপক্ষ। শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কেই চলছে চার ভবনের কাজ।

এরমধ্যে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান নিরিবিলি হোটেল। যা পাকিস্তান আমল থেকেই টিনশেড ছিল। এখন সেখানে করা হচ্ছে ছয়তলা বিল্ডিং। প্রায় ১০ শতক জায়গায় এই স্থাপনা করা হচ্ছে। এর পাশেই আরেকটি পাঁচ তলা ভবন করছে ইউসুফ ব্রাদার্স গং। এটিও টিনশেড থেকে বিল্ডিংয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে। এর আয়তনও প্রায় আট শতক। এই সড়কেই মুক্তিযোদ্ধা অফিস-সংলগ্ন আরেকটি স্থাপনা সংস্কারের নামে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি করছেন রেলওয়ের সাবেক ঠিকাদার মৃত নয়মুল চৌধুরীর ছেলে রেজওয়ান। এর সামান্য উত্তরে আল আরাফা ব্যাংকের পাশে আরেকটি বিল্ডিং করছে শাওন নামে একজন। প্রায় আট শতক জায়গায় করা হচ্ছে আট তলা ভবন।

এদিকে শহীদ জহুরুল হক সড়কে বহুতল ভবন করছে ঔষধ ব্যবসায়ী। এখানে প্রায় ছয় শতক জমির পাঁচটি দোকান ছিল। গত মাসে ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে সেখানে এখন ছয় তলা বিল্ডিং তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই জায়গায় থাকা দুটি বিশালাকৃতির গাছ কেটে বিক্রি করেছে। এই সড়কে তোফাজ্জল প্রিন্টিং প্রেস সংলগ্ন আরেকটি বহুতল ভবন করা হচ্ছে। এখানেও প্রায় চার শতক জায়গাজুড়ে চলছে কাজ।

এছাড়াও রেলওয়ে বাজার এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় রেলওয়ের জমিতে করা হচ্ছে একাধিক ভবনসহ বাড়ি তৈরি। যেন হিড়িক পড়েছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের। এসব কাজ চলছে সম্পূর্ণ অনুমোদনহীনভাবে। রেলওয়ে বা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কোনো বৈধতা ছাড়াই এই কর্মযজ্ঞ চললেও তারা নির্বিকার। 

অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ে ও পৌর কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে মৌখিক অনুমোদনের নামে কাজ করছে বিল্ডিং নির্মালকারীরা। রেলওয়ের ও পৌরসভার মধ্যে মামলা চলমান থাকায় কেউই লিখিত অনুমোদন দিচ্ছে না। তবে সেখানে কাজ করলেও বাধাও দেয়া হচ্ছে না। এ কারণেই সবাই এই সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে। আর টাকা দিলেই স্থানীয় রেলওয়ে বিভাগ নীরব থাকছে। একইভাবে পৌরসভাও নিরবতা পালন করছে। কারণ পৌর কর্তৃপক্ষ চায় ব্যবসায়ীরা উন্নয়ন করুক।

এ ব্যাপারে রেলওয়ে ভূসম্পত্তি ও স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডাব্লু) শরিফুল ইসলাম বলেন, মূলত রেলওয়ের ২.৭৫ একর জমি যা সৈয়দপুর পৌরসভার অধীন। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নাই। এটি দেখবে রেলওয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু ওই জমি নিয়ে মামলা আদালতে চলমান। সে কারণে সেখানে হস্তক্ষেপ করা যাচ্ছে না। তিনি এর দায় পৌর কর্তৃপক্ষের বলে জানান।