বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী, আজ ঢাকার আন্দোলনের ছক প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির মূল সংগঠন নেতা, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল আলাদা আলাদা জায়গায় অবস্থান করবে।
এছাড়া সরকার পতনসহ ১০ দফা দাবিতে পৃথকভাবে অংশ নেবে জামায়াত, কর্নেল (অব.) অলি আহমদের এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট ও ১১ দলীয় জোট। ঢাকায় বড় সমাগম ঘটাতে সরকারবিরোধী দলগুলো লন্ডন নির্দেশনায় একমত হয়েছে। গণমিছিলের জন্য যে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে বিএনপি সেই আলোকে আজ সবাই রাস্তায় নামবে। রাজধানীর পল্টন থেকে মগবাজার পর্যন্ত ১৪টি স্থানে থাকবে বিএনপি। ১২ দলীয় জোট বিজয়নগরে, সাতদলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পাটি-এলডিপি পূর্বপান্থপথ থেকে গণমিছিল বের করবে।
এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর বায়তুল মোকাররমে যদি অনুমতি পায়, আর না পেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা দুটি স্পটে মিছিল করবে। তবে কোন কোন স্পটে হবে তা এখনো চূড়ান্ত করেনি দলটি।
বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে ইতোমধ্যে আত্মপ্রকাশ হয়েছে ১২ দলীয় জোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির নেতৃত্বে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা ঐক্যজোট’ নামে আরও একটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। তারাও রাজধানীর একটি স্পট থেকে গণমিছিল বের করার কথা রয়েছে।
এদিকে এদিন নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তারা যদি কোনো ধরনের নাশকতা বা সহিংসতা করার চেষ্টা করে আমরা রাজনৈতিকভাবে সমুচিত জবাব দেবো। দলটির একটি সূত্র জানিয়েছেন, আজকে ঢাকার সাত স্পটে থাকবে আওয়ামী লীগ, উত্তরে পাঁচটি দক্ষিণে দুটি।
উল্লেখ্য, সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকাতেও ২৪ ডিসেম্বর এ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের হওয়ায় গণমিছিল ৩০ ডিসেম্বর করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। একই সাথে সমমনা অন্য দলগুলোও ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি নিয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন।
সাক্ষাৎ শেষে মঙ্গলবার রাতে ডিএমপি কার্যালয়ের সামনে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়েই বিএনপির গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হবো। এ কর্মসূচি সফল করাই এখন তাদের লক্ষ্য।’
বিএনপির গণমিছিল নয়াপল্টন থেকে মগবাজার : বিএনপির পূর্বঘোষিত গণমিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে মগবাজার চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিভাগীয় গণমিছিলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের গণমিছিল হবে শান্তিপূর্ণ। আগামীকাল দুপুর ২টায় নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়ে মিছিলটি নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মগবাজার চৌরাস্তা ঘুরে ফের নয়াপল্টনে এসে শেষ হবে। ঢাকাবাসীকে গণমিছিল সফল করার আহ্বান জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, গণমিছিল করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এর জন্যই আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওইতে ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। ডিএমপি আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকায় গণমিছিল নিয়ে কঠোর পুলিশ : আজ শুক্রবার রাজধানীতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলন শুরু। বিএনপিসহ অন্য দলগুলো গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে র্যাব ও পুলিশের স্পেশাল ফোর্স, ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি ৩০ ডিসেম্বর তাদের পূর্বঘোষিত দলীয় কর্মসূচি গণমিছিল করতে চায়। আমরা সার্বিক বিবেচনায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয় থেকে মগবাজার পর্যন্ত গণমিছিল করার অনুমতি দিয়েছি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমরা বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতার আশঙ্কা করছি না। তারা (বিএনপি) আমাদের সুশৃঙ্খল গণমিছিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরপরও যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করে বা অরাজকতার চেষ্টা করা হয় তাহলে প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। গণমিছিলের ব্যাপারে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করলে কোনো সমস্যা নেই। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।
গণমিছিলে বিএনপি নেতারা যেখানে থাকবেন : গণমিছিলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ও বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী এ তালিকা করা হয়েছে বলে জানান গণমিছিলের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দুপুর আড়াইটার মধ্যে নিজ নিজ স্থানে থেকে সার্বিক সহযোগিতার অনুরোধ জানান তিনি। গণমিছিলের মূল ট্রাকে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যরিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
গণমিছিলে সার্বিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বেনজীর আহমেদ টিটো, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, নবী উল্লাহ নবী, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, হাবিবুর রশীদ হাবিব, বেলাল আহমেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হায়দার আলী লেলিন, খান রবিউল ইসলাম রবি, অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান সুরুজ, অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক-সদস্য সচিব। রাজধানীর নাইটিঙ্গেল মোড়ে থাকবে মহিলা দল। মহিলা দলের পর ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাথে থাকবেন বিলকিস জাহান শিরিন, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তার রানু, রাশেদা বেগম হীরা, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নেওয়াজ হালিমা আরলী, শাম্মি আক্তার, নিলুফার চৌধুরী মনি, মিসেস রাবেয়া সিরাজ, মিসেস জাহানারা বেগম, অর্পনা রায় দাস। সাবেক মহিলা এমপিদের সমন্বয় করবেন আহমেদ আজম খান এবং হাবিবুর রশিদ হাবিব। নাইটিঙ্গেল মোড়ে থাকবে ঢাকা মহনগর উত্তর বিএনপি। নেতৃত্ব দেবেন ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপি আমান উল্লাহ আমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নাল আবেদীন ফারুক, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, আমিনুল হক, নাজিম উদ্দিন আলম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, তাবিথ আউয়াল, রফিক সিকদার, কাজী রফিক, বজলুল বাসিত আঞ্জু। তাদের সমন্বয় করবেন আমিনুল হক ও হায়দার আলী লেলিন।
ঢাকা ব্যাংকের সামনে থাকবে ছাত্রদল। এখানে আরও থাকবেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আকরামুল হাসান, আবু সাঈদ, বালুল করিম চৌধুরী আবেদ, ফজলুর রহমান খোকন। সমন্বয় করবেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। আনন্দ ভবনের সামনে থাকবে কৃষক দল। নেতৃত্বে থাকেবন শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, ওয়ারেস আলী মামুন, একরামুল হক বিপ্লব, হায়দার আলী লেলিন, আব্দুল মতিন, ওবায়দুল হক নাসির, শেখ শামীম, দুলাল হোসেন, মোশাররফ হোসেন। সমন্বয় করবেন দুলাল হোসেন। হকস বের সামনে থাকবে স্বেচ্ছাসেবক দল। নেতৃত্বে হাবিব উন-নবী খান সোহেল, মীর শরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল। সমন্বয় করবেন ওমর ফারুক শাফিন। পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা দল থাকবে ভিক্টোরি হোটেলের সামনে। নেতৃত্ব দেবেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জায়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেজবা, কাদের গনি চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। সমন্বয় করবেন রবিউল ইসলাম রবি। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থাকবেন আফরোজা খান রীতা, মনিরুল হক চৌধুরী। সমন্বয় করবেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও বেনজীর আহমেদ।
কড়াই গোস্তের সামনে থাকবে যুবদল। নেতৃত্বে থাকবেন বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী। সমন্বয় করবেন বেলাল আহমেদ। চায়না মার্কেটের সামনে থাকবে ঢাকা জেলা বিএনপি। নেতৃত্বে থাকবেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বেনজির আহমেদ টিটো, খন্দকার মাশুকুর রহমান, ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন। সমন্বয় করবেন মশিউর রহমান বিপ্লব। জোনাকি হলের সামনে শ্রমিক দলকে নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ শাহজাহান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, শরিফুল আলম, মাহাবুবুল হক নান্নু, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ আহমেদ মামুন মোল্লা। সমন্বয় করবেন সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির। পল্টন থানার উল্টোদিকে মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল এবং জাসাসের নেতৃত্বে থাকবেন আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আব্দুল বারী ড্যানী, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, আব্দুল মালেক, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, মশিউর রহমান বিপ্লব, দেবাশীষ রায় মধু। সমন্বয় করবেন আমিরুজ্জামান খান শিমুল। ফকিরাপুল দৈনিক বাংলা সড়কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, হারুন অর রশীদ, আলহাজ সালাউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, নবী উল্লাহ নবী, রফিকুল আলম মজনু, কাজী আবুল বাশার, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক। সমন্বয় করবেন কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু।
অনুমতি পেলে বায়তুল মোকাররমে জামাত না পেলে দুই স্থানে বিচ্ছিন্ন : রাজধানীতে গণমিছিল করতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ জন্য দলটি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে অনুমতি চেয়েছে। গতকাল সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার কার্যালয়ে গিয়েছে জামায়াতের প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট ড. গোলাম রহমান। আবদুল হালিম বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর অনুমতির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে সরাসরি গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবী জামায়াতের পক্ষ থেকে অনুমোদন চেয়েছেন। ডিএমপি কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— অনুমতির বিষয় জানানো হবে। এর আগে গত রোববার ২৫ ডিসেম্বর গণমিছিলের বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে অনলাইনের ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত। আবেদনে বলা হয়েছে, ১০ দফার পক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে গণমিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দ?ক্ষিণ। গণমিছিল শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে বাস্তবায়ন করতে ডিএমপির অনুমতি ও সার্বিক সহযোগিতা চায় জামায়াত। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়া?রি পুলিশের অনুমতি নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলে মিছিল সমাবেশ করে জামায়াত। এরপর গত ১০ বছরে কর্মসূচি পালনের অনুমতি পায়নি। গত কয়েক বছরে অনুমতি চেয়ে আবেদন করার তথ্যও নেই। তবে প্রায়ই বিভিন্ন দাবিতে দলটি ঝটিকা মিছিল করে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামা জামায়াত হঠাৎ কর্মসূচি পালনে অনুমতি চাইল। অনুমতি না পেলে ঢাকা শহরের দুটি স্থানে দলটি মিছিল করবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে শান্তিপূর্ণ গণমিছিল হবে জানিয়ে তা সফল করার আহ্বান জানান। বৈঠকের ব্যাপারে গণসংহিত আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েত সাকি বলেন, যুগপৎ আন্দোলের ভিত্তি হিসেবে একটা যৌথ ঘোষণার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। খুব দ্রুত এটি চূড়ান্ত করে সামনের যুগপৎ আন্দোলন এগিয়ে নেয়া হবে। ৩০ ডিসেম্বর যার যার অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালিত হবে।
পরবর্তী কর্মসূচিও সেখান থেকে ঘোষণা হবে। বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ তারিখ বিএনপির গণমিছিল যদি শান্তিপূর্ণ হয় আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা কারও সঙ্গে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করব না। তবে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে আমাদের আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সতর্ক অবস্থানে থাকবে। বিএনপি যদি ধরনের নাশকতা বা সহিংসতা করার চেষ্টা করে আমরা রাজনৈতিকভাবে সমুচিত জবাব দেবো। ইতোমধ্যে থানা-ওয়ার্ডে আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর ও বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে তারা।