ময়মনসিংহের রসূলপুর ও টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণীর খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে বন্যপ্রাণীরা। বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে ক্ষুধার্ত বানর। বন্যপ্রাণীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, মুক্তাগাছা উপজেলার রসুলপুর ও মধুপুরে ৫৯ হাজার একর বনাঞ্চল। এর মধ্যে রসূলপুরে ১৫ হাজার হেক্টর, বাকি অংশ মধুপুরে। এক সময় ছিল গহীন অরণ্য। কিন্তু এখন আগের মতো গাছপালা নেই বনে। উজাড় হয়ে গেছে অনেক আগেই। সব মিলে এখন বন রয়েছে মাত্র ২০ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে বনের অধিকাংশ জমি। বনের ভেতরেই হচ্ছে চাষাবাদ। রাতারাতি গড়ে উঠছে বসতবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা। এখন শুধু অপেক্ষা পুরো বন এলাকা গ্রাস করা। বন ঘিরে ছিল বাঘ, হরিণসহ নানা প্রজাতির অসংখ্য প্রাণী। বন উজাড়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীও। এখন শুধু রয়েছে বানর আর কিছু হরিণ। খাবারের অভাবে এসব বানর হানা দিচ্ছে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে।
বনে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার বানর ও হনুমান। আর মধুপুর বনের ভেতরে লহড়িয়া এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার ভেতর রাখা হয়েছে প্রায় ১০০ হরিণ। সরকারিভাবে হরিণের জন্য খাদ্য সরবরাহ করা হয়। তবে তা যৎসামান্য। কাঁটাতারের বাইরে রয়েছে আরও শতাধিক হরিণ। এদের জন্য কোনো খাদ্য বরাদ্দ নেই। কথা হয় রসূলপুর বন এলাকাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে।
তার দাবি, বনের ভেতর খাদ্যের অভাব থাকায় দল বেঁধে তাদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে বন্যপ্রাণী। তাদের ঘরে ঢুকে রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলছে। ঘরের টিনের চালা লাফালাফি করে নষ্ট করে ফেলছে। বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান জানান, বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে বানর, হনুমানসহ প্রায় অর্ধ লাখ বন্যপ্রাণী রয়েছে। পশু বিশেষজ্ঞরা বাইরে থেকে খাবার দেয়া নিষেধ করেছেন। এতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণী। এর পরও সামান্য পরিমাণ খাবার দেয়া হচ্ছে।