দেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্ধিত সভায় দুই দফায় বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শনিবার সকালে শুরু হওয়া সভার প্রথমভাগে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বক্তব্যের সুযোগ না দেয়ায় হট্টগোলের সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারা দেশের আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বার কাউন্সিলের বর্ধিত সভা শুরু হয়। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত বার কাউন্সিলের সদস্যরা একে একে বক্তব্য রাখেন। পরে দুপুর ১টার দিকে মঞ্চে বসে থাকা বিএনপি থেকে নির্বাচিত অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট এ কে এম বদরুল আনোয়ার দাঁড়িয়ে যান। বক্তব্যের সুযোগ না দেয়ায় তারা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
ব্যারিস্টার খোকন ও ব্যারিস্টার কাজল উচ্চস্বরে বলেন, আমাদের চারজনকে কেন বক্তব্যের সুযোগ দেয়া হলো না। এভাবে সভা চলতে পারে না।
ব্যারিস্টার খোকন বলেন, `আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের সাতবার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। বার কাউন্সিলে প্রায়ই সর্বোচ্চ ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কেন আমাদের বক্তব্যের সুযোগ দেয়া হবে না।`
ব্যারিস্টার কাজল বলেন, `আমি সুপ্রিম কোর্ট বারের তিনবারের সম্পাদক। বার কাউন্সিলের বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কেন আমাদের বক্তব্য দিতে দেয়া হলো না। অথচ আওয়ামী লীগের ৯ জন বক্তব্য দিলেন। এ সময় বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান সভার বিরতি ঘোষণা করেন। তিনি ব্যারিস্টার খোকন ও কাজলকে উদ্দেশ করে বলেন, সব জায়গায় একই ধরনের আচরণ করবেন না।`
তখন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঘোষণা দেন, `বিরতি শেষে যদি বিএনপিপন্থিদের বক্তব্যের সুযোগ না দেয়া হয় তাহলে সভা বয়কট করব।`
বিরতি শেষে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সভা আবারও শুরু হয়। শুরুতে বক্তব্য দেয়ার জন্য বিএনপি থেকে নির্বাচিত সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীনের নাম ঘোষণা করা হয়। তার বক্তব্য শেষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, `আমি সুপ্রিম কোর্টের বারের তিনবার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। দুইবার দায়িত্ব পালন করেছি। চলতি সেশনেও নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু নির্বাচনের ৪৫ দিন পর জোর করে অন্যজনের নাম সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখনো আমি সম্পাদক।`
এ সময় আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা বলেন, `আপনি সম্পাদক নন। মিথ্যাচার করবেন না।`
এ বক্তব্যের রেশ ধরে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল উপস্থিত ছিলেন।