ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ সম্মান প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তিতে একের পর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েও চাহিদা মাফিক শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভর্তির জন্য গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ইবির আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে এক থেকে দশম পর্যন্ত তালিকা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ তালিকা পর্যন্ত মোট ১৯৯০টি আসনের মধ্যে থেকে প্রাথমিক ভর্তির মাধ্যমে ভর্তির নিশ্চায়ন শেষে এখনও ৩০০টিরও বেশি আসন খালি আছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া।
এদিকে দশম তালিকায় ভর্তি শেষে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও এখনও প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।
গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত ভর্তি। আশঙ্কা করা হচ্ছে চূড়ান্ত ভর্তির পর আরও কিছু আসন খালি হতে পারে। এদিকে আসন ফাঁকা রেখেই হয়তো ক্লাস শুরু করার ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আসন ফাঁকা রেখে ক্লাস শুরু করার তারিখ ঘোষণা করেছে। ইবি প্রশসানও সে পথেই হাঁটতে পারে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার (আজ) মিটিংয়ে মতামতের ভিত্তিতে ক্লাস শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইবি সবচেয়ে পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় এটি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ- সুবিধা বলা চলে অনেকাংশেই বেশি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ইবিতে যুগোপযোগী বিভাগ, গবেষণাগার সুযোগ, আবাসন ব্যবস্থাসহ নানা দিক থেকে এগিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাসহ অন্যন্য কর্মকাণ্ডেও রয়েছে বেশ সাফল্য।
তারপরও নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে এমন অনীহা কেন? যেখানে অন্যান্যবার ইবিতে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা মুখিয়ে থাকত সেখানে একের পর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েও আসন পূর্ণ হচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, বিগত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাধর্মী পড়াশোনা অনেক কমে গেছে। রাজনীতির মাঠে সময় দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষাটা প্রয়োগ করতে পারছেন না অনেক শিক্ষক। শ্রেণীকক্ষ থেকে প্রশাসনিক পদটাকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কমে যাওয়ার পেছনে এ কারণটাই অধিকাংশে দায়ী।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির কারণেই এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে এবং ধীরগতির চলমান প্রক্রিয়া হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। শুধু ইবিই না অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও একই অবস্থা বলে জানান শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, গুচ্ছের সমন্বয়হীনতার কারণে জটিলতাগুলো তৈরি হয়েছে। যদি পরিকল্পনা করে সমানে এগিয়ে যেত তাহলে এত দীর্ঘ সময় লাগত না। আর হয়ত আসনও খালি থাকত না।