উত্তরা দিয়াবাড়ি বিআরটিএ কার্যালয়ের রাজত্ব এখন দালালদের হাতে। তাদের দৌরাত্ম্যে অসহায় সেবাপ্রত্যাশীরা। দিয়াবাড়ি বিআরটিএ কার্যালয়ে লাইসেন্সের কাজ করতে গেলে পড়তে হয় ঘুষবাণিজ্যের মধ্যে। এর মধ্যে ছয় থেকে আট ধরনের কাজে ঘুষবাণিজ্য ব্যাপক।
বিশেষ করে নাম্বার প্লেট, ফিটনেস, লার্নার, মালিকানা পরিবর্তন, রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজে ঘুষবাণিজ্য ওপেন সিক্রেট। উত্তরা দিয়াবাড়ি বিআরটিএ অফিসের মূল ভবন থেকে শুরু করে আশপাশের চায়ের স্টল, ফটোকপির দোকান, এমনকি ফাঁকা মাঠ— সর্বত্র দালালের ছড়াছড়ি। ফলে সেবা নিতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে।
গতকাল দিনভর অফিস চত্বরে অবস্থান করে দালালচক্রের অবাধ বিচরণ দেখা যায়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্যদের নাম। এই চক্রের মূলহোতা হান্নান, লতিফ, নাজু, নাসির, শাহীন, সাদেকসহ আরও কয়েকজন। এদের আন্ডারে রয়েছে আরও কয়েকশ দালাল। দালালের মাধ্যমে প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রেটে ঘুষ আদায় করা হয়।
যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাজে দুই থেকে চার হাজার, মালিকানা পরিবর্তনে তিন হাজার, ফিটনেস সংক্রান্ত কাজে এক থেকে দেড় হাজার টাকা ঘুষ কাউকে না কাউকে দিতেই হয়। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় পাস করতে হলে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ দেয়া অনেকটা `বাধ্যতামূলক`। এর আগেও এটি সংবাদপত্রে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দালাল জানান, আমরা টাকা দিয়ে কাজ করি, লাইসেন্স প্রতি দুই হাজার টাকা দেই। আবার নতুন করে দালালের মূলহোতা হান্নান, লতিফ, নাজু, শাহীন ও সাদেকরা আমাদেরকে বলেন, পুলিশের জন্য সপ্তাহে দালাল প্রতি পাঁচশত টাকা দিতে হবে, তা না হলে এখানে কাজ করতে পারব না।
এ বিষয়ে সেবা নিতে আসা একজন বেসরকারি কর্মকর্তা বলেন, আমি বহুদিন ধরেই নিজের গাড়ি ড্রাইভ করি। আমার দালালদের টাকা দিয়ে ঘুষের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাধ্য বিধায় আমাকেও টাকা দিতে হয়েছে। এগুলো বন্ধ করা দরকার।
এসব অনিয়ম ও ঘুষবাণিজ্যের বিষয়ে দিয়াবাড়ি বিআরটিএর মেট্রো সার্কেল ৩ এর প্রকৌশলী উথোয়াইনু চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এ বিষয় জানা নেই যদিও থেকে থাকে আমি এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।