বিভাগওয়ারি গুচ্ছভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগকে মোট তিনটি গুচ্ছে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম গুচ্ছে রয়েছে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ। দ্বিতীয় গুচ্ছে খুলনা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগ। আর তৃতীয় গুচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ। গুচ্ছভিত্তিক নিয়োগ হওয়ায় এবারই প্রথম সারা দেশে একযোগে নিয়োগ পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ করা হবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রথম গুচ্ছের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট) ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। আর বাকি দুই গুচ্ছের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামী চার মাসের মধ্যে প্রকাশ করার কথা রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানিয়েছিলেন, সর্বশেষ সারা দেশে শিক্ষক নিয়োগে প্রায় দুই বছর লেগে যায়। কিন্তু প্রতি বছর অনেক শিক্ষক অবসরে চলে যান। ফলে কিছু জায়গায় শূন্যতা থাকে দীর্ঘ সময়। সব শেষ নিয়োগে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক যোগদান করেননি। এ জন্য বিভাগ ক্লাস্টার ভিত্তিক বা বিভাগভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেবো। এতে করে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে আমরা শিক্ষক নিয়োগ করতে পারব।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী মে মাসের শেষ সপ্তাহে। জুনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেষে আগস্টেই মৌখিক পরীক্ষা। এরপর সেপ্টেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে চায় ডিপিই। আর দ্বিতীয় গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে আগস্টের মাঝামাঝি। আগস্টের মধ্যেই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেষে অক্টোবরে হতে পারে মৌখিক পরীক্ষা। এরপর নভেম্বরে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া তৃতীয় গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে অক্টোবরে। নভেম্বরে ফল প্রকাশ শেষে আগামী বছরের জানুয়ারিতে শুরু হতে পারে মৌখিক পরীক্ষা। এরপর ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরিকল্পনা করেছে ডিপিই।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিপিইর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমার সংবাদকে বলেন, নিয়োগে সময় সাশ্রয়ে আমাদের এ কর্মপরিকল্পনা। আমরা যেভাবে বিভাগভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছি এর মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত নিয়োগের জন্য আট বিভাগের অনুমোদিত শূন্য পদের সংখ্যা সাত হাজার ৪৬৩। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৩৬৫ আর সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে ৪১১টি। এ ছাড়া বরিশালে ৮৭১, রংপুরে ৯৮৮, খুলনায় ৯৪০, ময়মনসিংহ ৫৯৯, রাজশাহীতে এক হাজার ৫৮ এবং চট্টগ্রামে এক হাজার ২৩১টি। সম্প্রতি প্রকাশিত তিন বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তবে শূন্য পদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ৩৭ হাজার ৫৭৪ শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি হয়েছিল, ২০২২ সালে এসে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়, এতে প্রায় দুই বছর সময় ব্যয় হয়।