এজেন্ট ব্যাংকিং দিন দিন জনপ্রিয়তা পেলেও দেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোতে কমেছে আমানত। একই সঙ্গে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে কমেছে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের লেনদেনও। এ ছাড়া ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোতে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাবের সংখ্যাও কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স স্ট্যাটিস্টিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ১০টি ইসলামি ব্যাংক, প্রচলিত কয়েকটি ব্যাংকের ইসলামিক শাখা ও ইউন্ডোর এজেন্টগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বর শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোর আমানত কমেছে ২২ কোটি টাকা।
তবে ইসলামি ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোতে আমানত কমলেও বেড়েছে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোতে। তথ্যমতে, ২০২৩ সালের নভেম্বর শেষে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর এজেন্টগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বর শেষে এজেন্টগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত বেড়েছে ৭৫৫ কোটি টাকা।
এদিকে দেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোতে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমগুলোতেও লেনদেন কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের নভেম্বর শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক লাখ এক হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বর শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হওয়া লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে লেনদেন কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রেকগনিশন (এমআইসিআর) চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৪২ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বরে এমআইসিআর চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৩৪ হাজার ৫৮ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে এমআইসিআর চেকের মাধ্যমে লেনদেন কম হয়েছে ৮ হাজার ৩১৬ টাকা।
তথ্য মতে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ১৬ হাজার ১৬ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। পরের মাস ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছে ১৫ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে লেনদেন কম হয়েছে ৬৭০ কোটি টাকা।
তথ্যানুুুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বরে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৪৩ হাজার ২ টাকা। পরের মাস ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৩৫ হাজার ৭২০ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে আরটিজিএসের মাধ্যমে লেনদেন কম হয়েছে ৭ হাজার ২৮২ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর শেষে দেশের ইসলামি ব্যাংকগুলোতে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৬৬৯টি। পরের মাস ডিসেম্বরে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৩১ হাজার ২৩৬টি। সেই হিসাবে এক মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা কমেছে ৩ হাজার ৪৩৩টি।
তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে শহরে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব কমেছে এক হাজার ৭২১টি ও গ্রামে কমেছে এক হাজার ৭২১টি। এ ছাড়া মেয়ে শিক্ষার্থীদের হিসাব কমেছে তিন হাজার ৩৩টি ও ছেলে শিক্ষার্থীদের হিসাব কমেছে ৪০০টি।