আগামীকাল বুধবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের মিত্ররা অংশ না নেয়ায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আদর্শিক ও রাজনৈতিক মিত্র ১৪ দলীয় জোটপ্রার্থীও মাঠে নেই। ফলে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল আগে থেকেই। নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষদিকে এসে সেই শঙ্কাই বাস্তবে রূপ নেয়।
কোনো কোনো উপজেলায় প্রতিপক্ষের ভয়ভীতির কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে বাধ্য হন ভোটের মাঠে থাকা কোনো কোনো প্রার্থী। কোনো উপজেলায় সরাসরি চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। কোনো উপজেলায় মহিলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা; আবার একাধিক উপজেলায় প্রচার চালাতে গিয়ে প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে বিস্তর। প্রার্থীর বাড়ির সামনে ঘটেছে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও। গত রাতে প্রথম ধাপের প্রচার শেষ হলেও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন নন কিন্তু জনপ্রিয়— এমন প্রার্থী ও তার সমর্থকদের মধ্যে টেনশন কাটেনি। তারা আশঙ্কা করছেন ভোটের দিন প্রভাব খাটানো হতে পারে, ভোট চুরি বা কেন্দ্র দখলও করা হতে পারে। অনিয়মে বাধা দিলে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টিরও আশঙ্কা করছেন প্রভাববুিহীন জনপ্রিয় অনেক প্রার্থী।
শঙ্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে ৫ মে ফেসবুক লাইভে এসে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই দুই প্রার্থী হলেন নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ (কাপ-পিরিচ প্রতীক) ও সহসভাপতি ঈশ্বর চন্দ্র বর্মণ (ঘোড়া প্রতীক)।
৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আমি অংশ নিই। কিন্তু একজন প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে খাদ্যমন্ত্রী এবং তার পরিবারের নাম ব্যবহার করে ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আমার নেতাকর্মীদের আমার পক্ষে প্রচার না চালানোর জন্য বিভিন্নভাবে ভয় দেখাচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বহু নেতাকর্মীকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি ইউপি চেয়ারম্যানদের বাধ্য করা হচ্ছে ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে। ইউপি চেয়ারম্যানরা ওই প্রার্থীকে ভোট না দিলে উপকারভোগী ব্যক্তিদের টিসিবি, ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হানাহানি ও দ্বন্দ্ব নিরসনে আমি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গত ৫ মে রাত ৯টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আরেক প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র বর্মণ বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। কিন্তু নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজেকে মন্ত্রীর লোক বলে এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দাবি করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। ওই প্রার্থীকে ভোট না দিলে সরকারি সুবিধাভোগী ভোটারদের বঞ্চিত করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় এবং তার কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রার্থীর বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ
যশোরের শার্শা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিলের বাসভবনের সামনে দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ৫ মে ভোররাতে শার্শার নাভারন রাজনগর মোড়ে তার বাসভবনের সামনে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এর ফলে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘ভোররাতে হঠাৎ বিকট শব্দে আমরা জেগে যাই। নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থী আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই আমার বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘নির্বাচনে আমার অবস্থান অনেক ভালো। আমি যেন প্রচারণা থেকে বিরত থাকি, এ জন্যই এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ঘটনাটি প্রশাসনকে জানালে পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে।’
বেলকুচিতে থানায় ঢুকে প্রার্থীর ওপর হামলা
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে থানায় ঢুকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ৪ মে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ৩ মে সন্ধ্যায় লিখিত চিঠির মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। সে অনুযায়ী আগামী দুদিনের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (দোয়াত-কলম প্রতীক) ও তার কর্মী-সমর্থকরা বেলকুচি থানার ভেতরে ঢুকে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির (মোটরসাইকেল প্রতীক) এবং তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন। নির্বাচনি প্রচারে বাধা দিয়েছেন। বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। এসবের ভিডিও ফুটেজসহ অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাও করেছে। এসব কর্মকাণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনি আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি। যে কারণে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। সে সঙ্গে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে লিখিত নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাতীবান্ধায় নারী প্রার্থীর ওপর হামলা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমার ওপর হামলা চালিয়েছেন অপর প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থকরা। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ দুই প্রার্থীর ১০ সমর্থক আহত হয়েছেন। তারা হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ৩ মে দিবাগত রাতে হাতীবান্ধা উপজেলা মেডিকেল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাতে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থক হাফিজুল অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের শাহানা ফেরদৌস সীমাকে নিয়ে নির্বাচনি প্রচারের সময় অশ্লীল মন্তব্য করেন। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমার স্বামী ও পাটিকাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল আলম সাদাত প্রতিবাদ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শাহানা ফেরদৌসী সীমা তার সমর্থকদের নিয়ে মেডিকেল মোড় ত্যাগ করার সময় লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
মানিকগঞ্জে প্রার্থীর ওপর হামলা
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম খানের ওপর প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলা ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে তার অনুসারীরা বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। একই দিন একই স্থানে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানুর অনুসারীরাও ‘মিথ্যা হামলা’র অভিযোগের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করেছেন। গত ৩০ এপ্রিল সকালে উপজেলার টেপড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। আবদুর রহিম জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শিবালয় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আর রেজাউর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সূত্র জানায়, ২৭ এপ্রিল রাতে উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনি প্রচার শেষে ব্যক্তিগত গাড়িতে ফেরার পথে আবদুর রহিমের গাড়ি লক্ষ করে ককটেল ও গুলিবর্ষণ করা হয়। ককটেল বিস্ফোরণে গাড়ির পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেঁচে যান তিনি। আবদুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। হামলা হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার পরদিন থানায় অভিযোগ করা হলে তদন্তের কথা বলে তারা মামলা নেয়নি, হামলাকারী কাউকে গ্রেপ্তারও করেনি। এ অবস্থায় আমি নির্বাচন নিয়ে খুবই শঙ্কিত।
নাটোরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন মানিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গত ১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক জানান, বুধবার বিকাল থেকে তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলার সোনাপুর বাজারে তিনজন সমর্থক নিয়ে প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুল ইসলাম শরিফের সমর্থক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৫-৭ জন হামলা করে। তাকে মারপিট করা অবস্থায় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তার সমর্থকরা তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নারায়ণগঞ্জে প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা
নারায়ণঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত তিনজন আহত হন। গত ৫ মে রাতে উপজেলার মদনপুর অটোরিকশা স্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। আতাউর রহমান মুকুল ‘চিংড়ি’ প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। আহতরা হলেন মুকুলের শ্যালক মোহাম্মদ সোহেল, সমর্থক শ্যামল ও মোস্তাক। প্রাথমিকভাবে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আতাউর রহমান মুকুলের ছেলে রুপন আহমেদ বলেন, মদনপুরে প্রচারকাজ শেষে আমার মামাসহ আমাদের কর্মী-সমর্থকরা ক্যাম্পে ফিরছিলেন। আর প্রচারকাজ শেষ করে আমার বাবা আগের গাড়িতে চলে যান। এ সময় অটোরিকশার জন্য স্ট্যান্ডে অপেক্ষারত অবস্থায় আমাদের ওপর কয়েকজন যুবক হামলা চালায়। হামলাকারী যুবকরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ‘দোয়াত-কলম’ প্রতীকের এমএ রশীদের কর্মী বলে অভিযোগ করেন রুপন।
এদিকে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা হামলাকারীদের মধ্য থেকে অপু ও সাকিব নামে দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত ৮টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজার এলাকায় ওই হামলায় আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক সাকিব স্থানীয় সত্তার মুন্সীর ছেলে এবং অপু নগরের পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা কাগাশুরা বাজারের নির্বাচনি কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে রাসেল মুন্সীর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তাদের পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং নির্বাচনি মাঠ থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় রাসেল ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক রানা শরীফের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় রানাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে বরিশাল জেলা পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলামের ওপর হামলার চেষ্টা চালান রাসেল মুন্সী। খবর পেয়ে রানা শরীফের স্ত্রী ঘটনাস্থলে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করে দুর্বৃত্তরা।
প্রসঙ্গত, প্রথম ধাপের ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার শেষ হয় গত রাতে। ভোটগ্রহণ হবে কাল ৮ মে। প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জমজমাট প্রচার-প্রচারণার পর এখন শুধু ভোটগ্রহণের অপেক্ষা।