টানা দেড় যুগ ধরে রেমিট্যান্স আহরণের শীর্ষে

স্মার্ট অর্থনীতি নিশ্চিতে ডিজিটাল সেবা বাড়াচ্ছে ইসলামী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৪, ০৪:১৭ পিএম

ছয় হাজারেরও বেশি শাখা-উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে  নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকসেবা  
 

বৈধ চ্যানেলে টানা দেড় যুগ ধরে রেমিট্যান্স আহরণে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি ব্যাংক খাতের যুগান্তকারী উদাহরণ। শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংসহ ছয় হাজারেরও বেশি ইউনিটের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকসেবা দিয়ে বিগত বছরে সারা দেশে আহরিত রেমিট্যান্সের মধ্যে ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ রেমিট্যান্সই আহরণ করে ইসলামী ব্যাংক। এই ব্যাংকের বিনিয়োগের মাধ্যমেও কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষের। এই ব্যাংকের অর্থায়নেই গড়ে উঠেছে দেশের তৈরি পোশাক খাতের ৩৬ শতাংশ ও টেক্সটাইল খাতের ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এবং দুই হাজারের বেশি কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। দেশের ৪০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার বিকাশও ঘটিয়েছে ইসলামী ব্যাংক। 

পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক এখন পর্যন্ত দেশের ৩৩ হাজার গ্রামের প্রায় ১৭ লাখ প্রান্তিক পরিবারের মাঝে ৪৮ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে, যার ৯২ শতাংশ সুবিধাভোগীই নারী। ৪১ বছরের পথচলায় জনসাধারণের আস্থা ও ভালোবাসায় সদা অগ্রসরমাণ এই ব্যাংকে গচ্ছিত আমানত সবচেয়ে নিরাপদ এবং বিনিয়োগও প্রয়োজনমুখী খাতের জন্য অবারিত। আগামী দিনে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ অবদান রাখবে ইসলামী ব্যাংক— এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইসলামী ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এখন স্মার্ট লেনদেনে মনোযোগ দিচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ইসলামী ব্যাংক। ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রোডাক্টস অ্যান্ড সার্ভিস। এছাড়া সরকারের ক্যাশলেস পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও এগিয়ে রয়েছে ব্যাংকটি। স্মার্ট অর্থনীতি গড়তে ইসলামী ব্যাংক বৃদ্ধি করবে ডিজিটাল সেবাও। ‘স্মার্ট অর্থনীতি বাস্তবায়নে অচিরেই ডিপোজিট অটোমেশন, পর্যায়ক্রমে ব্লকচেইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা অ্যানালাইসিস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অব থিংস ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে পেমেন্ট পরিচালিত হবে।’ 

প্রতিষ্ঠার ৪১ বছর অতিক্রমের দীর্ঘ যাত্রায় ইসলামী ব্যাংক অর্জন করেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। যে সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবেও সমাদৃত। এই ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদেও দিয়ে আসছে নিয়মিত দিকনির্দেশনা। যার সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই অব্যাহত রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রা। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে স্মার্ট অর্থনীতি বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করা  ছাড়াও ব্যাংকের অন্যসব কার্যক্রমেও শরিয়াহ্র নীতিমালা শতভাগ পরিপালন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত শুদ্ধাচার যথাযথ অনুসরণ, জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি ও আরও উন্নত সেবা প্রদানের মাধ্যমে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান আরও সুসংহত করার জন্যও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি।  রেমিট্যান্স ছাড়াও আমদানি-রপ্তানি, আমানত বৃদ্ধি, বিনিয়োগেও ব্যাংকটির সাফল্য আকাশচুম্বী। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ব্যাংক এটি; ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে যার আমানত ছিল ১৫ লাখ ৩ হাজার ৪৩০ কোটি ও বিনিয়োগ ছিল এক লাখ ৫০ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। 

আমদানি-রপ্তানিতেও ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে ব্যাপক অবদান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি ছিল ৫৭ হাজার ৩৪১ কোটি আর রপ্তানি ছিল ৩৩ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা।  জাতীয় উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সে হিসেবেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের ভূমিকা ব্যাপক। বৃহৎ শিল্প, সিএমএসএমই তথা কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগে যেমন অবদান রাখছে, তেমনি নির্মাণ খাত, সেবা শিল্প, ভোক্তা বিনিয়োগ, কৃষি খাত, মৎস্য খাতেও বিশেষ অবদান রাখছে ইসলামী ব্যাংক। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) কার্যক্রমের মাধ্যমেও দেশের অর্থনীতিতে ধারাবাহিক অবদান রেখে যাচ্ছে ব্যাংকটি।