আগামী বছর টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা আয়োজন করবে না সাদ অনুসারীরা—স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ইজতেমা ঘিরে মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের (শুরায়ে নেজামী) ও মাওলানা মোহাম্মদ সাদ অনুসারীদের মধ্যে বিবদমান বিরোধ যেন শেষই হচ্ছে না। প্রাণহানি-মামলাসহ নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরও দুপক্ষকে একছাতার নিচে এনে এবারও ইজতেমা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। যদিও সরকারের তরফ থেকে এ নিয়ে চেষ্টার কমতি ছিল না। উভয়পক্ষের নানা দাবি আর প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পৃথকভাবে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি দেয়া হলেও এবার অন্য ইস্যুতে ফের বেঁকে বসেছে সাদ অনুসারীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সাদ অনুসারীদের চিঠি পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত নভেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ইজতেমা সংক্রান্ত বৈঠকে ৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্বের ইজতেমা আয়োজন করবে তাবলিগ জামাতের জুবায়ের অনুসারীরা। ইজতেমা শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বাদ মাগরিব প্রশাসনের কাছে ইজতেমা ময়দান হস্তান্তর করবেন তারা। অন্যদিকে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজন করবে তাবলিগ জামাতের সাদ অনুসারীরা। ১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বাদ মাগরিব তারাও প্রশাসনকে ইজতেমা ময়দান হস্তান্তর করবেন।
তবে ওই সিদ্ধান্তের আলোকে সাদ অনুসারীদের দেয়া চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে, আগামী বছর টঙ্গীস্থ ইজতেমা ময়দানে তারা ইজতেমা আয়োজন করবে না এবং এ বিষয়ে জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থী অনুসারীদেরও সম্মতি রয়েছে। সাদ অনুসারীরা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাল্টা চিঠিও দিয়েছেন সাদপন্থীরা।
তারা বলছেন, আগামী বছর সাদ অনুসারীরা টঙ্গীতে ইজতেমা আয়োজন করবে না; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে তারা একমত নয়। আর এ বিষয়ে মাওলানা জুবায়ের ও সাদ অনুসারীদের সম্মতি রয়েছে, সেটিও সত্য নয়। তারা বলছেন, আমরা এ বিষয়ে কখনো মৌখিক বা লিখিত সম্মতি দেইনি এবং ইজতেমা সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গত নভেম্বরের বৈঠকেও এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শুধু তাই নয়, এ পর্যন্ত ইজতেমা সংক্রান্ত এ ধরনের কোনো বৈঠকেও এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে প্রথম পবের্র ইজতেমা আয়োজনের পূর্বে গতকাল ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
সেখানে তিনি বলেন, ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা মাঝখানে একটু সময় বাড়িয়েছি, যেন প্রথম পক্ষ আমাদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেয়ার পর পুরো মাঠ ও আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারি। আমরা মাঠ বুঝে নেয়ার পর যখন সেটিসফাইড (সন্তুষ্ট) হব, কোনো নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকবে না, তখন দ্বিতীয় পক্ষকে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান জানাব। এ জন্য আমরা একটু সময় নিয়েছি। এটা দুপক্ষকে নিয়ে বসেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।