চট্টগ্রাম নগরীর ৩০টি এলাকায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে ওয়াসার পানি পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে ফুটো হয়ে গেছে ওয়াসার মূল সঞ্চালন পাইপলাইন। এ কারণে বন্ধ রাখতে হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ প্রকল্পের পুরোপুরি পানি সরবরাহ। কবে নাগাদ পাইপ লাইন মেরামতের পর পানি সরবরাহ সচল হবে সে বিষয়ে জানাতে পারছেন না ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, ‘চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এ প্রকল্পের আওতায় কুয়াইশ এলাকায় একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য কাজ চলছিল। এতে এক্সকাভেটর ব্যবহার করা হয়। সেই এক্সকাভেটরের আঘাতে ৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের মূল সঞ্চালন পাইপ ফুটো হয়ে গেছে। এ কারণে কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই পাইপ লাইন দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা এলাকায় অবস্থিত কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়।
৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের ওই পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নগরীর উত্তর ও দক্ষিণ হালিশহর, আগ্রাবাদ, নয়া বাজার, মাদারবাড়ি, দেওয়ানহাট, ধনিয়ালাপাড়া, লালখান বাজার, ওয়াসার মোড়, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট, বায়েজিদ বোস্তামি, নাসিরাবাদ, অক্সিজেন, মুরাদপুর, কদমতলী, আনন্দবাজার, রৌফবাদ, রুবি গেট, হিলভিউ আবাসিক, মোমেনবাগ, বহদ্দারহাট, কুয়াইশ, নন্দনকানন, জামালখান, সিরাজউদ্দৌলা রোড, চকবাজার, আন্দরকিল্লা ও সংলগ্ন এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, পানি সংকটের কারণে ৩০ এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে খাবার ও ব্যবহারের পানি জোগান দিতে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মড সার্কেল) নূরুল আমিন গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলাকালে গত সোমবার নগরীর কুয়াইশ এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প-১ এর প্রধান পানি সরবরাহ লাইন। এ কারণে পানি শোধনাগার প্রকল্পটি বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে মেরামত কাজ চলমান আছে। কবে নাগাদ মেরামত শেষ করা হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম ওয়াসা বর্তমানে দৈনিক ৫০ কোটি লিটারের মতো পানি সরবরাহ করে থাকে।
এরমধ্যে কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প-১ থেকে ১৪ কোটি লিটার, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ থেকে ১৪ কোটি লিটার, মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে ৯ কোটি লিটার, মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে ৯ কোটি লিটার পানি পাওয়া যায়। এ ছাড়াও গভীর নলকূপ থেকে আসে ৪ কোটি লিটার পানি।
সবমিলিয়ে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি নগরীতে সরবরাহ করে ওয়াসা। বর্তমানে কর্ণফুলী পানি শোধনাগার প্রকল্প-১ থেকে পানি সরবরাহ গত সোমবার দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে।