ঢাকা
শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪,
নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ১৭, ২০২১, ১১:৩০ এএম
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের আর্থিক খাত। শুধু করোনার কারণে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে দেড় কোটি মানুষ। এমন তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) যৌথ গবেষণায়।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সংস্থা দুটির আয়োজিত এক যৌথ ওয়েবিনারে দারিদ্র্য বৃদ্ধির এই তথ্য উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা বিষয়ক পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
গবেষণাপত্র উপস্থাপন করে তিনি বলেন, করোনা দুর্যোগের সময় ৩ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। শহর অঞ্চলে ইনফরমাল ইকোনোমি থেকে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ে ১ কোটি ১১ লাখ থেকে ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছেন এসএমই ও ইনফরমাল সেক্টর থেকে।
করোনায় নারী উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছেন বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। এশিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, দেশে দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশ হয়েছে। মহামারির প্রভাবে এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ।
সিপিডির মতে, কম আয়ের শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি আর্থিক জটিলতায় পড়েছেন। বিলসের তথ্য বলছে, ৪৭ শতাংশ বস্তিবাসী ও ৩২ শতাংশ শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী খাদ্য খরচ কমাতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের আয় কমেছে ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকায় ৪২ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ৩৩ শতাংশ। বেতননির্ভর মানুষের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ।
ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য ও শ্রমিক নেত্রী শিরীন আকতার বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে আমাদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে সামাজিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশ করোনা নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করছে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দেড় কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনমজুর শ্রেণির শ্রমিকরা কীভাবে সামনের দিন পার করবেন তা এখন ভাবনার বিষয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আবদুস সালাম বলেন, বর্তমানে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালীন সময়ে অত্যন্ত সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিম কাজ করছে। এরই মধ্যে ২৩টি টিম ১৮৬টি কারখানা পরিদর্শন করেছে। সরকার ঘোষিত ২৩টি প্যাকেজের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্টরা। এ থেকে বোঝা যায় শ্রমিকদের কত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
যৌথ ওয়েবিনারটি পরিচালনা করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্টির ট্রেজারার সৈয়দ মনজুর এলাহী। এতে অন্যান্যের মধ্যে যুক্ত ছিলেন বিআইএলএসের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান এবং জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. আমিরুল হক আমিন।
আমারসংবাদ/আরএ/জেআই
