Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪,

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বাড়াবে পদ্মা সেতু

ইউএনবি

জুন ১৬, ২০২২, ০১:৪৭ পিএম


বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বাড়াবে পদ্মা সেতু

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে গতি আসবে। ঘটবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধি। বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ফলে একদিকে যেমন পরিবহন খরচ কমবে, অন্যদিকে বাজারে পণ্যের মূল্যও কমে যাবে- এমনটি বলছিলেন বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান।

দেশের সিংহভাগ কলকারখানা ও তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল শতকরা ৮০ ভাগ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বন্দর থেকে খালাস করা কাঁচামাল দ্রুত সময়ে শিল্প কলকারখানায় পৌঁছে গেলে পণ্যের উৎপাদন খরচও কমে যাবে।শিল্প-কলকারখানা প্রসারিত হবে। কৃষিজাত পণ্যের বাজার প্রসারিত হবে। এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য স্বল্প সময়ে় এবং অল্প খরচে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে অধিক মুনাফা পাবে। বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যকারিতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। এ অঞ্চলের সামগ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আমূল পরিবর্তন হবে। জিডিপি এবং রাজস্ব আয় দুইই বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে সরকার প্রতিবছর ছয় হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে। পদ্মা সেতুর কারণে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার কেটি টাকায়। 

বেনাপোল আামদানি- রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের চাওয়া পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ এবং কম সময় লাগার কারণে দেশে অন্যতম বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আমদানি ও রপ্তানিকারকরা উৎসাহিত হবেন। আমদানি ও রপ্তানিকারকদের আর্থিক সাশ্রয়ও হবে। 

ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ জানান, এই সেতু ব্যবসা ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। দেশ থেকে রপ্তানি বাড়বে দ্বিগুণ। শুধু ব্যবসা বাণিজ্য নয়, সকল দিকেই পদ্মা সেতুর প্রভাব পড়বে। বেনাপোল বন্দরের হারানো গৌরব ফিরে পাবে বলে প্রত্যাশা তার। 

ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের জন্য দূর্গম পথ ছিল ঢাকা। বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে ৮/১০ ঘন্টা সময় লেগে যেত। প্রতি বছর শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে পদ্মার দু’পাড়ে শত শত যানবাহন এবং হাজার হাজার মানুষের দূর্ভোগ দেখেছি। এ অঞ্চলের মেধাবীরা ঢাকার সংগে উন্নত সড়ক যোগাযোগ না থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্বেও ঢাকায় গিয়ে পড়াশুনা করতে পারেনি। বহু রোগী সময় মতো পদ্মা নদী পার হতে না পেরে মৃত্যুবরণ করেছে ফেরি ঘাটেই।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, পদ্মা সেতু ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন। সরকার নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য খুলে যাবে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে পণ্য খালাস করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে বাড়বে যাত্রী পারাপার। বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করছে। পাদ্মা সেতু চালু হলে যাত্রী পারাপার বাড়বে , সেই সঙ্গে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়। 

বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে এটা খুবই আনন্দের বিষয়। বেনাপোল দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়বে দ্বিগুণ। বেনাপোল দিয়ে রেলপথে মালামাল আমদানি বেড়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে পণ্য খলাসের পর দ্রুত সময়ে রেল যোগে পণ্য পৌঁছে যাবে ব্যবসায়ীদের কাছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হবে।


ইএফ

Link copied!