Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৪,

উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে সিত্রাং

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০৮:৩৫ পিএম


উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে সিত্রাং

বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ পটুয়াখালীর কলাপাড়া-খেপুপাড়া উপকূলে আছড়ে পড়তে শুরু করে। রাত আটটা ঝড়টির কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া বইছে, হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ছানাউল হক মন্ডল জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে উপকূলে এমনকি ঢাকায়ও দমকা বাতাস রেকর্ড হচ্ছে। ঝড়ের কেন্দ্র এখনও সাগরে। কক্সবাজারে ৭৪ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিবেগে ঝড়ো বাতাস রেকর্ড হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি রাত সাতটা নাগাদ পায়রা বন্দর থেকে ১৭০ কিমি দূরে অবস্থান করছিলো। ঘূর্ণিঝড়ের উপরিভাগের ব্যাস চার থেকে পাঁচশ’ কিলোমিটার। যার কিছু অংশ প্রবেশ করেছে উপকূলে। তবে কেন্দ্র এখনো সাগরে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ভোলার পাশ দিয়ে, বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূল অতিক্রম করবে মধ্যরাত থেকে। মংলা ও পায়রা বন্দর সাত নাম্বারে আছে। চট্টগ্রামে ছয় নামিয়ে সাত নাম্বার বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার আগের মতোই ছয় নম্বর বিপদ সঙ্কেতে থাকবে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছাস হতে পারে ১৫টি উপকূলীয় জেলায়। মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে পুরোপুরি স্থলভাগে এসে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিত্রাং বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে। এ জন্য তারা তিনটি কারণের কথা বলছে। কারণ তিনটি হলো ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য।

উপকূল পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেনীর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে পাঁচ থেকে আট ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঘূর্ণিঝড়ের সময় অমাবস্যা থাকায় জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠতে পারে। ফলে দেশের উপকূলের বেশিরভাগ এলাকা ওই জোয়ারে প্লাবিত হবার আশঙ্কা আছে। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১০ কিলোমিটার হতে পারে। ঝড়ে বাতাসের গতির চেয়ে জলোচ্ছ্বাসের কারণে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতে পারে।

এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকেই। এর অগ্রভাগ আঘাত করবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট থেকে শুরু করে ফেনী ও নেয়াখালী পর্যন্ত। আর কেন্দ্র পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর ও ভোলা জেলায় আঘাত করতে পারে।

তিনি আরও জানান, সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটার মধ্যে উপকূলের দিকে আঘাত হানবে। এর কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হেনে অতিক্রম করবে মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিকে। এরপর এটি দুর্বল হয়ে ক্রমেই স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, লঘুচাপ শুরুর পর থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেরি করা হয়নি। দুর্যোগ মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লোকজনকে বাড়িঘর থেকে আনা হয়েছে ও প্রায় ৭৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। প্রয়োজনীয় খাবার, নগদ টাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও জানান, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী।

 

ইএফ

Link copied!