ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৫:০৪ পিএম
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৫:০৪ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বালিয়াডাঙ্গী-নেকমরদ মহাসড়কে সেদ্ধ আমন ধান শুকাচ্ছেন আশপাশের বাসিন্দারা। এতে মনে হচ্ছে মহাসড়কটি যেন ধান শুকানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। এতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে থ্রি-হুইলার, ইজি-বাইক, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল আরোহীরা।
গত বছরে বালিয়াডাঙ্গী-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কে বেশ কয়েকজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়। পরে কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি নজরে আসলে মহাসড়কটি ধান শুকানোর অনুপযোগী করে। ফলে এ বছরে ধান শুকাতে দেখা যায়নি এই মহাসড়কে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বালিয়াডাঙ্গী-নেকমরদ সরেজমিনে দেখা যায়, বালিয়াডাঙ্গী-নেকমরদ মহাসড়কে লোলপুকুর ডিএম উচ্চবিদ্যালয় থেকে গান্ডিকারী হাট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কে প্রায় ৩০ জনের বেশি কৃষাণ-কৃষাণি ধান শুকাচ্ছেন। আর এ ধান শুকানোর কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। তারা সাথে নিয়ে আসছেন পরিবারে থাকা ছোট শিশুদের।
ফুলতলা গ্রামের ইজি-বাইক চালক সাত্তার জানান, সূর্য ওঠার আগেই রাস্তা ফাঁকা থাকে। সূর্য উঠলে রাস্তায় ধান শুকানোর কাজে লোকজনের কারণে বড় গাড়িগুলোর সাইড দিতে খুব ঝামেলায় পড়তে হয়। অনেক সময় কৃষক-কৃষাণিরা তাদের ছোট সন্তানদের নিয়ে আসে। কখন কোনো অঘটন ঘটে যায় এটাই ভয় লাগে। অনেক সময় গাড়ি থামানোর প্রয়োজন পড়ে।
এই মহাসড়কে ট্রাক চালকরা জানায়, মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। এসবের কারণে ট্রাক নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে ভয়ে ভয়ে ওই রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। গাড়ি চালানোর সময় একটু অমনোযোগী হলেই দুর্ঘটনা ঘটবে। তাছাড়া ধান শুকানোর কারণে পুরো পরিবার চলে এসেছে রাস্তার ওপর।
বোয়ালধার গ্রামের কৃষক আব্দুল জানান, আগের মতো বাড়ির সামনে গৃহস্থরা ফাঁকা জায়গা ফেলে রাখেন না বলে ধান শুকানোর জায়গার অভাবে বাধ্য হয়েই মহাসড়কের ওপরই ধান শুকানোর কাজ করতে হচ্ছে।
ছাগলডাঙ্গী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বছর বালিয়াডাঙ্গী-নেকমরদ মহাসড়কে ধান শুকানোর সময় আমার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। তাই এবার আমরা মিলের চাতালে ধান শুকাচ্ছি। প্রতি বছরে এই সড়কে ধান শুকানোর সময় ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা হয়।
স্বাধীন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ রায়হান দুলু বলেন, মহাসড়কে ধান শুকানো বন্ধের জন্য আমরা ২০১৮, ১৯ ও ২০ সালে চৌরাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং এমনকি জরিমানাও করা হয়েছে। তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরে বালিয়াডাঙ্গী-নেকমরদ ও বালিয়াডাঙ্গী-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
এসএম