নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০১:০৯ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০১:০৯ পিএম
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় শাওন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। এ সময় কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সাকালে র্যাব মিডিয়া সেন্টার কাওরান বাজার থেকে প্রেস ব্রিফিং থেকে এ তথ্য জানান র্যাবের মিডিয়া শাখার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় শাওন নামক এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক এবং আরও অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান মিজান বেপারী (ফরমা মিজান) (৩২) ও তার সহযোগী মো. জুয়েল (ফুটবল জুয়েল) কে (২৯)গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দেশীয় অস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি ভিকটিম শাওন হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হচ্ছে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে নিয়ে। গত বছরের মাঝামাঝি সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সঙ্গে রজবের (মিজানের ছোটো ভাই) সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়।
প্রেস ব্রিফিং করছেন র্যাবের মিডিয়া শাখার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। ছবি: আমার সংবাদ
পরবর্তীতে পুনরায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত মাসে ভিকটিম শাওন এবং রজবের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই গ্রেপ্তারকৃত মিজানকে জানায়। পরবর্তীতে তারা কিছুদিন পূর্বে মিজানের নেতৃত্বে শাওনকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে। এ সময় তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম তার স্ত্রীর জন্য ঔষধ আনতে বাসা থেকে বাহিরে বের হয়। এ সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মিজান মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবস্থান করে। আসামি রজব অতর্কিতভাবে ভিকটিমকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। হত্যাকাণ্ডের সময় গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল রাস্তার মোড়ে পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল যেন হঠাৎ করে কোন পথচারী ঘটনাস্থলের দিকে না আসে।
তখন ভিকটিম গুরুত্বর জখম হয়ে জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামীরা দৌঁড়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তারকৃত মিজান ও জুয়েল মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃত মিজান যাত্রাবাড়ী এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে যাত্রাবাড়ী ও মীরহাজিরবাগ এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল (ফুটবল জুয়েল) পাশাপাশি সে মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত। সে মিজানের সাথে বিভিন্ন সময় যাত্রাবাড়ী, মীরহাজিরবাগ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার নামে ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪টি মামলা রয়েছে।
এআরএস