নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১৫, ২০২৩, ০৬:৫০ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১৫, ২০২৩, ০৬:৫০ পিএম
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, রুপকল্প ২০-২১ এর সকল সূচক অর্জনের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যমাফিক এগিয়েছে দেশ। প্রথম রুপকল্পে আমরা উল্লেখ করেছিলাম ২০১০ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে, সেখানে ২০১৫ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। মধ্যম আয়ের দেশ মানেÑ তখন মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ছিল ১২৭৩। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলোতেও আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সহায়তায় লিঙ্গ সমতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। দেশটা লক্ষ্যমাফিক এগিয়েছে।
বুধবার (১৪মার্চ) বিকালে রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা এখন কলেজ জীবনে প্রবেশ করবে। জীবনের আরেকটি পর্যায়ে পৌঁছাবে। যেখানে তোমাদের জীবনের পরিধি আরও প্রসারিত হবে। সুযোগের জানাল খুলে যাবে তোমাদের।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর এই সদস্য বলেন, আমরা দেখেছিলাম ২০১০ সালে যেখানে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার হবে, ২০২১ সালে সেটি ২৩৭০ ডলার হয়েছিল। অর্থাৎ যা যা আমরা পরিকল্পনায় লিখেছিলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সহায়তায় সব সূচকই আমাদের অর্জিত হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। এসব অর্জনগুলো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে প্রাাইমারি থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের জন্য এটা বড় অর্জন এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ট্রাস্ট ব্যাংক করেন দরিদ্র ছাত্রীদের জন্য। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে পারবেন এই ট্রাস্ট থেকে সহায়তা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১০০ ছাত্রের মধ্যে ৬৭ জনই ছাত্রী। এক্ষেত্রে আমরা চাচ্ছি ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা আরও এগিয়ে যাক। সে লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আর প্রাইমারী শিক্ষার ক্ষেত্রেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। ২০১৩ সালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৬৫টি প্রাইমারী প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করেন, এক লাখ ৫ হাজার প্রাইমারী শিক্ষককে জাতীয়করণ করেন এবং প্রাইমারী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা শিক্ষকদের ১৩ বেতন স্কেলে নিয়ে আসি। দ্বিতীয় শ্রেনীর মর্যাদা দেয়া হয় প্রধান শিক্ষকদেরও। এসবই এ সরকার আমলে।
বিদায় অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মন্নাফী। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিদায় কেউই দিতে চায় না, বিদায় নেয়াও যায় না। বিদায় একটাই সেটা আল্লাহর ডাকে। ১০টি বছর তোমরা এ স্কুলে পড়েছ, এ স্কুলটাকে ভুলে যাওয়া কঠিন। এ স্কুলেই পড়াশুনা করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা অনেক গর্বের ব্যাপার। আমরা গর্ব করি। তিনি বলেন, নারীদের এখন অনেক সুযোগ সুবিধা আসছে। যা করে দিচ্ছেন নারীবান্ধব বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরাও চাই সমাজে-রাষ্ট্রে সর্বত্রই নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ুক। এগিয়ে আসুক সবক্ষেত্রে। কারণ নারীরা সৎ ও আদর্শিক হয়। যে কারনে আমরা চাই- ভাল শিক্ষা নিয়ে নারীরা কর্মসংস্থানে আসবে। রাষ্ট্রের সেবা করবে, পরিবারের সেবা করবে। শিক্ষাতর্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, পরিবারসহ দেশের মুখ উজ্জ্বল করার জন্য পড়াশুনার কোনো বিকল্প নেই। শুধুমাত্র সার্টিফিকেটের জন্য পড়াশুনা করলে চলবে না। বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশ নারী ইউএনও। এসব টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, পিছিয়ে যাওয়া যাবে না। এখন পিছিয়ে যাওয়ার সময় নয়, এগিয়ে যাওয়ার সময়, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সময়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি করেন শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, লীলা নাগ কর্তৃক প্রতিষ্টিত এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি তৃতীয় থেকে ষষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন এ প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাতর্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা নতুন স্তরে পদার্পন করছো। মানসিকভাবে সুশিক্ষা অর্জন কর। জ্ঞানপাপী যেন হতে না হয়।
তিনি বলেন, যে শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে বিদেশে চলে যায়, আমরা সে শিক্ষার্থী চাই না। জিপিএ-৫ পেয়ে শিক্ষার নামে পরিবারকে দূরে রাখবা, দেশের মানুষকে দুরব রাখবা, সে শিক্ষা আমরা চাই না। আমরা যেন তোমাদের নিয়ে গর্ব করতে পারি সে শিক্ষায় শিক্ষিত হও। সুন্দর বাংলাদেশ বির্নিমাণে তোমরা ভূমিকা রাখবা- এ প্রত্যাশা রাখি আমরা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহম ভুইয়া। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে দিকনির্দেশনামুলক বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শাখার শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
আরএস