নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১২, ২০২৫, ১২:৩১ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১২, ২০২৫, ১২:৩১ এএম
ঝিমিয়ে পড়েছে বিদেশিদের বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুত অর্থছাড় প্রক্রিয়া। ফলে বাজেট সহায়তার অর্থ পাচ্ছে না সরকার। যদিও বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাপান ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কারের শর্তে বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম হাতেও নিয়েছে। যদিও এখনো সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ ও পরামর্শ বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। সেজন্য প্রতিশ্রুতির পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও বিদেশি দাতারা বাজেট সহায়তার কোনো অর্থ ছাড় করেনি।
অথচ গত ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার ছাড় হওয়ার কথা ছিলো এবং আগামী জুনের মধ্যে সরকার দুই বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ বাজেট সহায়তা হিসেবে পাওয়ার আশা করছে। তবে তা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরপরই উন্নয়ন সহযোগীরা একাধিক বৈঠক করে জরুরি বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুত ওই অর্থ সরকার জোর তদবির করেও ছাড় করাতে পারেনি।
অথচ গত নভেম্বরেই বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার প্রস্তাব বোর্ডে জমা দেয়ার কথা জানিয়েছিল। তারপর চার মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারকে ওই বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি জানানো হয়নি। বাজেট সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) জুনের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ঋণ দিতে রাজি হয়েছিল।
যদিও সেজন্য সরকারকে ব্যাংক খাত সংস্কারসহ বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যার মধ্যে অন্যতম হলো বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক সংখ্যা ও তাদের কার্যকাল কমানো। সরকার ওই শর্ত পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর তারই অংশ হিসেবে গঠন করা হয়েছে আর্থিক খাত সংস্কারে কমিশনও। শুধু তাই নয়, ব্যাংক খাত সংস্কার, ব্যাংক খাত শক্তিশালীকরণ, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে তিনটি পৃথক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রথমদিকে উন্নয়ন সহযোগীরা যেভাবে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিল, ছয় মাস পর তা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও ওসব বিষয়ে নেগুসিয়েশনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাতে প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় প্রক্রিয়া কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সংখ্যা কমিয়ে আনার একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রমকে বেগবান করতে বিশ্বব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এডিবি ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দুটি বাজেট সহায়তা অনুমোদন করেছিল। কিন্তু তা এখনো পাওয়া যায়নি। বাজেট সহায়তার পাশাপাশি তখন বিশ্বব্যাংক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাতে ৩৭৯ মিলিয়ন এবং চট্টগ্রামে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রকল্প সহায়তাও অনুমোদন করে। যা ওই সময় ছাড়ও করা হয়।