অক্টোবর ২৩, ২০২৩, ০৯:৪৯ পিএম
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি গত ১৪ সেপ্টম্বরে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায়। এতে করে মার্কেটের কয়েকশত দোকান ভস্মীভূত হয়ে যায়। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ব্যবসায়ীরা। আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষি মার্কেটে পূর্বের নকশা অনুযায়ী নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। মার্কেট নির্মাণের জন্য তিন কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য এক কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথাও বলা হয়। যার যেখানে দোকান ছিল, যতটুকু জায়গা ছিল সে অনুযায়ীই ব্যবসায়ীরা দোকান বরাদ্দ পাবেন। কৃষি মার্কেটকে পরিকল্পিতভাবে বহুতল ভবন মার্কেট নির্মাণ করা হবে। তবে নোটিশ দিলে মার্কেট নির্মাণের জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়ার কথাও বলেন ডিএনসিসি ।
গতকাল সোমবার অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজার (কৃষি মার্কেট) পরিদর্শন শেষে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত বাংলাদেশে আমরা জরাজীর্ণ কৃষি মার্কেট চাই না। এখানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হবে। এই মার্কেটে সিনেপ্লেক্স থাকবে, শিশুদের খেলার জায়গা থাকবে। মাল্টিপারপাস শপিং মল নির্মাণ করা হবে। মার্কেটে সবধরনের কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করা হবে। নিরাপত্তার জন্য বসানো হবে ফায়ার হাইড্রেন্ট। মার্কেট কমিটিকে অনুরোধ করছি একটি ফায়ার ফাইটিং টিম গঠন করবেন। অগ্নিকান্ড ঘটলে যেন প্রাথমিকভাবে তারা পদক্ষেপ নিতে পারে। আপনারা ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হোন সেজন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ করে দোকান ফিরিয়ে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটাতেই আমরা এসেছি। নতুন বহুতল মার্কেট নির্মাণ হওয়ার পর আপনারাও অবশ্যই এখানে দোকান বরাদ্দ পাবেন।
ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাদেক খান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি জানি অনেকে ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা করে। মার্কেট পুড়ে যাওয়ায় আজ তারা কঠিন বিপদে পরেছে। ব্যবসায়ীদের বিপদে সহায়তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আশা করি মেয়র মহোদয় দ্রুতই মার্কেটটি নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দোকান বুঝিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিবেন।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মীরা মানুষের বিপদে কখনো ঘরে বসে থাকে না। শেখ হাসিনার কর্মীরা অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো বিপদে মানুষের জন্য ঝাপিয়ে পরেন। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। মেয়র মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে, শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয় সমাধান করে দিবেন। ব্যবসায়ী ভাইদের একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
ডিএনসিসির ২৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজার (কৃষি মার্কেট) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সলিমউল্লাহ (সলু) বলেন, ‘আমি সবসময় ব্যবসায়ীদের পক্ষেই কথা বলছি। ব্যবসায়ীদের জন্যই আবার মার্কেট নির্মাণ করা হবে। সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রত্যেকেই আপনারা দোকান পাবেন। পূর্বে বরাদ্দকৃত সবাই অবশ্যই দোকান পাবেন। এটি নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কোন কারণ নাই। তবে সিটি কর্পোরেশন রাজস্ব বাড়ানোর জন্য হয়তো বেশি দোকান নির্মাণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুনদের দোকান বরাদ্দ দেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, সভা চলাকালীন টেলিফোনে সংযুক্ত হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি মার্কেট নির্মাণের জন্য ০২ কোটি ৩০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন।
ডিএনসিসির অঞ্চল-০৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ডিএনসিসির ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম, ৩৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন, নারী কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী ও রোকসানা আলম প্রমুখ।
আরএস