টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৩:৩১ পিএম
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৩:৩১ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফে মালয়েশিয়াগামী ১৫০ জনকে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা বলে নামিয়ে দিলো টেকনাফে। তবে এই ১৫০ জনের মধ্যে বেশিরভাগই রোহিঙ্গা নারীও শিশু।
বৃহস্পতিবার ভোরে সাগরে ভাসমান অবস্থায় স্থানীয় জেলেরা টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের সৈকতের মহেষখালী পাড়াঘাটে ট্রলারটি টেনে আনে।
উদ্ধার হওয়া মোহছেনা আক্তার (২৩) জানিয়েছেন, তারা তিন দিন টেকনাফের একটি জেলে ঘাট থেকে রওয়ানা হয়েছিলেন। তাদেরকে সাগরে তিনদিন ঘুরানোর পর বৃহস্পতিবার ভোরে মালয়েশিয়া পৌঁছার কথা বলে টেকনাফ সৈকতে নামিয়ে দেয়।
এখন তারা কয়েক জন পূনরায় ক্যাম্পে চলে যাবেন বলে জানান। এ তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি জহির আহমদ বলেন, সাগরে যাত্রীবাহী একটি মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ভাসমান অবস্থায় দেখে জেলারা টেনে কূলে এনেছেন। ট্রলারে দেড়শ মতো যাত্রী ছিল।
ভোরে সবাই ট্রলার থেকে নেমে গেছে এবং মহেশখালীয়াপাড়ার বিভিন্ন জনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে বলে আমি শুনেছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফের মহেষখালী পাড়ার মেরিন ড্রাইভে রোহিঙ্গারা রাস্তার বসে কাঁদছেন। আবার অনেকে টমটমে করে ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার কথা বলছিলেন।
এ সময় কথা হয় লায়লা বেগম এর সঙ্গে। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া তার বিয়ে হয়েছে। তার স্বামী তাকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছেন। তার স্বামী মালয়েশিয়া অবস্থান করছে। তাই সে মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছে।
তার পাশে থাকা মো.জাবেদ (২৮) জানান,‘ক্যাম্পের পরিস্থিতি খুব খারাপ। প্রতিদিনই খুনাখুনি হচ্ছে। সেই কারণে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে উন্নত জীবনের আশায় সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিলাম। আমরা ট্রলারে প্রায় দেড়শ জন ছিলাম। সেখানে আমার পরিবারের ৬ সদস্য ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাগরপথে আমরা মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। প্রথমে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দালালদের মাধ্যমে টেকনাফের একটি পাহাড়ে ৫ দিন ছিলাম। সেখান থেকে ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে থাকা ট্রলারে উঠি। ট্রলারে আমার মতো অনেকে ছিল। এরপর মাঝিরা প্রথমে মিয়ানমারে, সেখান থেকে হেঁটে হেঁটে ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাগরে তিন দিন ঘুরতে থাকে। একপর্যায়ে কূলের কাছকাছি এসে মাঝিমাল্লারা ট্রলার রেখে পালিয়ে যায়। পরে ২টি নৌকা আমাদের ট্রলারটি টেনে কূলে নিয়ে আসেন।’
টেকনাফের মহেষখালীয়াপাড়া জেলে ঘাটের এক নৌকার মাঝি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো ভোরে মাছ শিকারের জন্য ঘাটে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় ঘাটে একটি মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার থেকে ঝাঁপ দিয়ে অন্ততঃ দেড়শ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ সৈকতের কূলে উঠতে দেখি। ওই ট্রলারে ৪-৫ জন ছাড়া বাকি সবাই নারী ও শিশু।’
জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রলার কূলে ফিরে আসার খবর শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ কোস্ট গার্ডের স্টেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোলেমান কবির বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি, পরিত্যক্ত ট্রলারখানা জেলে সমিতির জিম্মায় রাখা হয়েছে। পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নিবে।
এইচআর