Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

সূতিভোলা খালকে নান্দনিক করবে ডিএনসিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম


সূতিভোলা খালকে নান্দনিক করবে ডিএনসিসি

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মূল খালের পাশে অনেক খাস জমি রয়েছে। সেসব খাস জমিতে শিশুদের জন্য খেলাধুলার জায়গা করে দেওয়া হবে, খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন, নান্দনিক গণপরিসর, পার্ক, নৌকার জন্য ঘাট নির্মাণ করা হবে। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রথম ধাপে ছয় দশমিক আট কিলোমিটার খালের উন্নয়ন কাজ করা হবে। এর আওতায় সূতিভোলা খাল ও সমুদ্র খালের উন্নয়ন হবে। প্রায় সাত কিলোমিটার খাল উন্নয়নের এই প্রকল্পে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ 

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর সাতারকূল-ভাটারা একশো ফুট এলাকায় সূতিভোলা খালের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন এবং খালের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন। শুরুতে ডিএনসিসি মেয়র সূতিভোলা খাল এবং পরবর্তীতে পাশের সমুদ্র খালের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় মেয়রের উপস্থিতিতে খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটের তৈরি ওয়াল ভেঙে দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। 

খাল দখলদারদের ধিক্কার জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারি খাল, খাস জমি এগুলো কতিপয় দখলদার অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। জানতে পেরেছি যারা খাল, খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করবো। ঢাকার পূর্ব পাশে মোট প্রায় ২৯ কিলোমিটার খালের উন্নয়ন ও খালগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটি তৈরি করা হবে। এ বছরের মধ্যে প্রথম ধাপে সূতিভোলা খালের সাত কিলোমিটার উন্নয়ন করবো এবং পরবর্তীতে বাকি ২২ কিলোমিটার এর উন্নয়ন হবে।’

ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করছি আপনারা নিজ দায়িত্বে খালের এবং সরকারি জমির অবৈধ দখল ছেড়ে দিন। খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন এবং সবুজায়ন হলে এই এলাকাটি অনেক সুন্দর হবে। জনগণ এর সুফল ভোগ করবে। তাই জনগণের জন্য এই এলাকাটি নান্দনিকভাবে সাজাতে খালের উন্নয়ন করা হবে।’

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘জলাধারগুলো ঢাকা শহরের হার্টের (হৃৎপিণ্ড) মতো। এই জলাধারের পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হার্টের ব্লক হওয়ার মতো। হার্টে ব্লক হলে যেমন হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়, তেমনি জলাধার ব্লক হলে শহর প্রাণ হারাবে, জলাবদ্ধতা হয়ে শহর ডুবে যাবে। তাই হাউজিং কোম্পানিগুলোকে এই জলাধার ভরাট করতে দেয়া যাবে না। সিটি কর্পোরেশনসহ সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে এই বিষয়ে কাজ করতে হবে।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘ঢাকার খালগুলো একসময় ওয়াসার অধীনে ছিল। ২০২০ সালে সিটি কর্পোরেশন বুঝে পাওয়ার পর থেকে খালের উন্নয়নে কাজ করছে। বিভিন্ন খালে দেখা যাচ্ছে নেভিগেশন নিশ্চিত না করে পানির উপরের স্তরে ওয়াসার পাইপ বসানো হয়েছে। যারা ডিজাইন করেছে কিভাবে এটি হলো? আমি অনুরোধ করবো প্রতিটি খালের নেভিগেশন নিশ্চিত করে পাইপ বসানোর জন্য। সবাই সমন্বয় করে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হবে, একটি সুন্দর ঢাকা নির্মাণ করা সম্ভব হবে।’

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ৪০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নজরুল ইসলাম ঢালী, ৪১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন, ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলমসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এইচআর

Link copied!