নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাং ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ গ্রুপের হোতা মো. জুলফিকার আলীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জুলফিকার আলী (৩৭), মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস(২৮), মো. সুরুজ মিয়া(৩৯)।
জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর আদাবর থানাধীন মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কিশোর গ্যাং পরিচালনাকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় উদ্ধার করা হয় ১টি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, মোহাম্মদপুরে কতিপয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবনসহ এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। তন্মধ্যে মূলহোতা জুলফিকারের নেতৃত্বে ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ নামে দুটি কিশোর গ্যাং পরিচালনা করত।
তিনি আরও জানান, আধিপত্য বিস্তারের জন্য কিশোর গ্যাংকে অস্ত্র সরবরাহ করে তাদের দ্বারা দলবদ্ধভাবে মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করে। এছাড়াও হোতাদের নির্দেশে ‘ডায়মন্ড’ ও ‘দে ধাক্কা’ দুটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি ও বাস যাত্রীদেরকে টার্গেট করে যাত্রীদের ব্যাগ-পার্টস, মোবাইল ইত্যাদি ছিনতাই করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরজুড়ে তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ‘ডায়মন্ড’ ও ‘দে ধাক্কা’ দুটি কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতায় প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিরোধী অন্যান্য গ্যাংয়ের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তো। খুবই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হোতাদের নির্দেশে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশিয় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করত। এসব ঘটনায় তারা হরহামেশাই যে কাউকে গুলিবিদ্ধ, কুপিয়ে জখম, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করে না।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, নবীনগর হাউজিং, বসিলা চল্লিশ ফিট, কাঁটাসুর, তুরাগ হাউজিং, আক্কাস নগর, ঢাকা উদ্যান নদীর পাড়, চন্দ্রিমা হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, বসিলা হাক্কার পাড় ইত্যাদি এলাকাজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া পরিচালনা করতো।
এছাড়াও কিশোর গ্যাং সদস্যরা নিজেদেরকে প্রশাসনের লোক পরিচয় প্রদান করে সাধারণ পথচারীদের পথরোধের মাধ্যমে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় প্রদর্শন করে টাকা আদায় করতো। বিভিন্ন ঠিকাদারের কাজ আটকিয়ে চাঁদা আদায়ের জন্য কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে বিদেশি পিস্তল দিয়ে ঠিকাদারের কাছে পাঠাত।
আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মাসুম/ইএইচ