নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪, ০৮:২০ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪, ০৮:২০ পিএম
রাজধানীর রামচন্দ্রপুর ও লাউতলা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে ডিএনসিসি। প্রথমে খালের মোহনার জায়গা দখল করে বানানো একটি আধপাকা ও একটি পাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় খালের পাড়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ভাঙার কাজ।
ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা খালের সীমানা মেপে দেখেন নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গার ওপর বানানো হয়েছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনটির অবৈধ অংশ ডিএনসিসি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি বিশেষ বুলডোজার ও এক্সেভেটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অবৈধ ভবন ভাঙার কাজ করা হয়।
শুক্রবার মেয়রের উপস্থিতিতে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান।
পরে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রামচন্দ্রপুর খালের ময়লা পরিষ্কার করা সম্পন্ন হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার লাউতলা রামচন্দ্রপুর খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএনসিসিকে সহায়তা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী।
তিনি বলেন, খালে যারা ময়লা ফেলেন, তাদের মস্তিষ্কে ময়লা আছে। তাদের মনে ময়লা আছে। তারা সুনাগরিক নন। খালে ময়লা ফেলে নিজেদের সুনাগরিক দাবি করা যায় না।
খাল উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ময়লা ও দখলমুক্ত করে রাজধানীর খালগুলোর আগের রূপে ফেরানো হবে। পরিবেশকে আমরা ধ্বংস করে ফেলেছি। পরিবেশ এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, রাস্তা ঘাট ডুবে যায়। কারণ খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। ময়লা ফেলে খালগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। খাল পুনরুদ্ধারে আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।’
মেয়র বলেন, এর আগে মিরপুর প্যারিস খাল, সূতিভোলা খালে অভিযান করেছি। গত দুইবছর আগে এই মোহাম্মদপুরেই লাউতলা খালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে আমরা গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। সেখানে এখন সবুজায়ন হয়েছে। পাশেই বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে একটি মাঠ নির্মাণ করে দিয়েছি। আজ রামচন্দ্রপুর খালে অভিযান শুরু করেছি। এটি প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল। খালের সীমানার ভিতরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, অবৈধ ভবন সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা কোন বৈধ নোটিশ দিব না। সবাই জানে কারা খালের সীমানায় ভবন বানিয়েছে। ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল জনগণের। এই সীমানা কেউ দখল করতে পারবে না।
মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে খাল দখলমুক্ত করে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করছি। কিন্তু মানুষ খালে ময়লা বন্ধ করছে না। সবাই বলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশন কিছু করে না। এলাকাবাসীকে বলতে চাই আপনারা যদি খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করেন তাহলে জলাবদ্ধতা থাকবে না। শুধু সিটি কর্পোরেশন না, আপনাদের নিজেদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা খালের ময়লা পরিষ্কার করে দিচ্ছি। এখন খালের পাড়ে বাসিন্দাদের দায়িত্ব হবে ময়লা না ফেলা।
অভিযানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর রোকসানা আলম ও শাহিন আক্তার সাথি প্রমুখ।
মজুমদার/ইএইচ