নিজস্ব প্রতিবেদক:
মার্চ ১৬, ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মার্চ ১৬, ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘গুলশান মসজিদের সামনে লেকে জাহান্নাম থেকেও খারাপ অবস্থা হয়ে আছে। এই এলাকার মলমূত্র সব এখানে ফেলা হয়। এটি মেনে নেয়া যায় না। এই লেক গুলোতে মাছের চাষ হয় না, মশার চাষ হচ্ছে। আমি চাই এই লেক গুলোতে শিশুরা খেলবে। ওয়াটার ট্যাক্সি চলবে। আরো আধুনিক যন্ত্র থাকবে যা দিয়ে তারা খেলবে। কিন্তু পানি হয়ে আছে শতভাগ দূষিত। এখানকার কোনো মানুষ এই লেক থেকে উপকৃত হচ্ছেনা। এই এলাকায় অতিরিক্ত মশা, যা এই লেকগুলো থেকে হয়। গুলশান এলাকার মানুষের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এই লেক পরিষ্কার করে দিচ্ছে।’
শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও গুলশান সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে গুলশান লেক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। পরিষ্কার অভিযানে ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পাশাপাশি গুলশান সোসাইটি, ৬টি স্কুলের শিক্ষার্থী, জাগো ফাউন্ডেশন ও শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রায় ৪শ জন অংশ নিয়েছেন।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গুলশান লেক, বারিধারা লেক মূলত রাজউকের অধীনে আছে। তাদের আমি চিঠি দিয়েছি এগুলোকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে দিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু এই লেক এখনো রাজউকের অধীনে রয়ে গেছে। সিটি কর্পোরেশনকে দেয়নি। গুলশান লেকের পাশেই গুলশান জামে মসজিদ। এই মসজিদের মুসল্লিরা আমাকে বার বার জানিয়েছে লেকের দূষিত পানির দুর্গন্ধ মসজিদে আসে। দুর্গন্ধে টিকা যায় না। গুলশান সোসাইটি, বারিধারা সোসাইটির নেতৃবৃন্দ আমার কাছে গিয়েছে। তারা নিজেরা এই লেক পরিষ্কারে অংশ নিতে চায়। তাই হস্তান্তর করুক আর না করুক সেটি নিয়ে চিন্তা না করে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে জনগণকে নিয়ে লেক পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।’
নগরবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে একটা সোসাইটিকে সুন্দর করা সম্ভব না যতক্ষণ না এখানকার মানুষই এগিয়ে আসে। এখানকার বিভিন্ন স্বনামধন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও শিশুরা এই কার্যক্রমে উপস্থিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ফাউন্ডেশন ও এখানে উপস্থিত হয়েছে গুলশান বনানী অভিজাত এলাকা। এখানকার একেকটি ফ্ল্যাট ২৫ কোটি, ৫০ কোটি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক এই এলাকার বিল্ডিংগুলো থেকে পয়ঃবর্জ্য সরাসরি এই লেকে এসে পড়ছে। ডিএনসিসির স্টর্ম ড্রেনের সাথে একটি চোরাই পাইপ সংযুক্ত করা হচ্ছে। এই ড্রেন দিয়ে শুধু বৃষ্টির পানি যাওয়ার কথা। যারা পয়ঃবর্জ্য সরাসরি ফেলবে তাদের পাইপে আমি কলাগাছ থেরাপি দিবো। যাতে করে এই বর্জ্য আবার তাদের দিকে ব্যাক যায়। একটা ছোট ইটিপি প্ল্যান্ট মাত্র ৩ লাখ টাকা। এসব প্ল্যান্ট করতে রাস্তার নিচে যতটুকু জায়গা লাগে সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা করে দিবে। আমরা চাই শুধু সরকার না এলাকাবাসীও এগিয়ে আসুক।’
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা নাগরিকরা এবং পুরো সমাজের সবাই যদি একসঙ্গে একটা উদ্যোগ নেই, তাহলে সেটা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমাদের লেকগুলো এত সুন্দর, এগুলোকে যদি আবার জীবিত করতে পারি, তাহলে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। এটা একটা উদ্যোগের ব্যাপার। রাজউক, সিটি কর্পোরেশন, আমাদের সোশ্যাল সোসাইটি এবং ওয়াসাকে ডাকবো। কারণ ওয়াসা সব সময় বলে যে, আমাদের ড্রেনেজ আছে আবার নেই। তাই আমার মনে হয়, একটা সমন্বয় করে কাজগুলো করতে হবে।’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘শুধু গুলশানের নয় এমনকি কালাচাঁদপুরে যে লেক আছে, বারিধারার পেছন দিকে যে লেক আছে এছাড়াও অনেকগুলো লেক আছে যেগুলো পরিষ্কার করা দরকার। আর দেরি করতে চাই না। আমার একটা প্রত্যাশা থাকবে শুধু লেকগুলো পরিষ্কার হবে তাই নয়। আগামী দিনেও যাতে লেকগুলো পরিষ্কার থাকে এবং যত্ন নেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা আমরা সবাই মিলে করবো।’
বিআরইউ