Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

অবৈধ গ্যাসলাইন’র কারণে বাড়ছে অগ্নিঝুঁকি: আইপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মার্চ ২২, ২০২৪, ০৯:০১ পিএম


অবৈধ গ্যাসলাইন’র কারণে বাড়ছে অগ্নিঝুঁকি: আইপিডি

সিলিন্ডার গ্যাস, জনগণের জীবনের নিরাপত্তা ও ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়েই আবাসিক পর্যায়ে পাইপ ভিত্তিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে সিলিন্ডারভিত্তিক গ্যাসকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদিও আবাসিক গ্যাস ব্যবহার মোট ব্যবহারের শতকরা ১০ ভাগের মতো।

ফলে প্রাধান্য পেয়েছে সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠী স্বার্থ। পাশাপাশি গ্যাস লাইনের লিকেজ ও অবৈধ গাস লাইন এর কারণেও বাড়ছে অগ্নিঝূকি। ভবনে নিম্নমানের ইলেকট্রিক সামগ্রীর যথেচ্ছ ব্যবহার ও আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক গুদাম জীবনের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বাস্তবতায় অগ্নি ঝুঁকি কমাতে কার্যকর নগর ও ভবনের পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মনে করে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।

শুক্রবার (২২ মার্চ) ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর আয়োজিত গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ঢাকার বেইলি রোডসহ নগরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা: নগর পরিকল্পনা ও নীতি কৌশলের দায় শীর্ষক  পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিশ্লেষণী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়।

আইপিডি আরও জানায়, নগর ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা যেমন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিস্ফোরক পরিদপ্তর ও পরিষেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার গাফেলতিজনিত দায় যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি সঠিক নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাব এবং স্বার্থান্বেষী মহলের ব্যবসায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নীতি কৌশল প্রণয়ন এর দায় রয়েছে।

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, রাষ্ট্রের মনোযোগ বেশি প্রকল্প ও অবকাঠামো নির্মাণে। কিন্তু একটা রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে সুশাসনের ওপর। যত বেশি সুশাসন থাকবে রাষ্ট্রের মানুষের জীবন তত বেশি নিরাপদ হবে। ভবনের নিরাপত্তা সুশাসনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু সুশাসনে আগ্রহ ও বিনিয়োগ বাড়েনি। গোষ্ঠী স্বার্থে পরিকল্পনা ও নীতি কৌশল পরিবর্তন আনবার কারণে অগ্নিঝূঁকি বাড়ছে ক্রমাগত। সিলিন্ডার ব্যবসার পরিধি বাড়লো, বহুতল ভবনের উচ্চতা ছয় তলার বেশি না করে  হবে না, ১০ তলার বেশি করা হল।

অনুষ্ঠানে আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ ও অতিঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করা হলেও তা সিলগালা বা খালি করবার কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না।  বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে দুইটি সিঁড়ি ও বহির্গমন পথ থাকবার কথা কিন্তু ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় ১০ তালার উঁচু ভবনকে হাই-রাইজ হিসাবে বিবেচনা করায় অগ্নি ঝুঁকি বৃদ্ধি বাড়ছে।

আইপিডির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুকে মাথায় রেখেই নগর পরিকল্পনা ও  ভবনের নকশা করতে হবে। নগরকে নিরাপদ করতে অসংগতিপূর্ণ মিশ্র ব্যবহার পরিহার করতে হবে। বিএনবিসি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ) গঠন করবার তাগাদা দেন তিনি।

রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা সিংগাপুর হংকং এর মত বহুতল ভবন বানাতে আগ্রহী, অথচ ভবনের আশেপাশে পর্যাপ্ত জায়গা ছাড়তে রাজি নই। সেসব শহরে ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন এর মাধ্যমে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বহুতল ভবন বানায়, আর আমরা সরু গলির ভেতরে এ ধরনের ভবন বানিয়ে শহরকে অনিরাপদ বানিয়ে ফেলেছি। নগরকে নিরাপদ করতে রাজউকের যেমন দায় আছে, পেশাজীবীদের ও অনুরূপ দায় আছে।

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক বলেন, অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসকে ভবন সিলগালা করে দেয়ার ক্ষমতা দিতে হবে। একই সাথে ঢাকার বাইরে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ড. ফরহাদুর রেজা, পরিকল্পনাবিদ রেদওয়ানুর রহমান, পরিকল্পনাবিদ আব্দুল আহাদ নাফিস প্রমুখ।

বিআরইউ

Link copied!