নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৩০, ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৩০, ২০২৫, ০১:৫৮ পিএম
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, ঢাকার সব ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
বলেছেন, পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ‘সমন্বিত নিরাপত্তা বলয়’ গড়ে তোলা হবে। কোনো ধরনের নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকলেও নিষিদ্ধঘোষিত কোনো দল যাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
রোববার জাতীয় ঈদগাহে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বরাবরের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে, যা সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে। বায়তুল মোকাররমে ৫টি ঈদ জামাতের মধ্যে প্রথম জামাত সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহের জামাতটি সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ঢাকা মহানগরীতে মোট ১১১টি ঈদগাহে এবং ১,৫৭৭টি মসজিদে ১,৭৩৯টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, সব স্থানের ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা বিধানে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। তল্লাশির জন্য আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। পুরো জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ আশপাশের এলাকা সিসিটিভি আওতাভুক্ত থাকবে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে, যা কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
তিনি বলেন, ঈদগাহে প্রবেশের প্রধান তিনটি গেইটে ব্যারিকেড থাকবে, যেখানে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। মৎস্যভবন, প্রেস ক্লাব, শিক্ষাভবন এবং ঈদগাহ ময়দানের চতুর্পাশে বহির্বেষ্টনী দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকা এসবির সুইপিং টিম এবং সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড সুইপিং করবে। সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। সাদা পোশাকে ডিবি ও সিটিটিসি সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। ওয়াচটাওয়ার থেকে মনিটরিংসহ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কাজের সহায়তার জন্য সকলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কোনো প্রকার ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ নিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। জামাত শেষে সবাই সুশৃঙ্খলভাবে বের হওয়ার জন্য তাড়াহুড়া না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সন্দেহজনক কিছু মনে হলে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানাতে বা প্রয়োজনে ৯৯৯ বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা দুই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। একটি হলো `ওভার` এবং আরেকটি `কভার`। সবকিছু আমরা ডিসক্লোজ করি না, অনেক কিছু নিরাপত্তার স্বার্থে গোপন রাখি।
তিনি বলেন, ঈদে কোনো ঝুঁকি নেই। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা রমজান মাসে ঢাকাবাসীকে অনেক ভালোভাবে নিরাপত্তা প্রদান করতে পেরেছি। আজকের দিনটিও ভালোভাবে পার করতে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ। ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া এটিইউ, সিটিটিসি, ডিবি ও বাংলাদেশ আর্মি নিরাপত্তার সমন্বয়ে কাজ করবে।
ঈদ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের `অপতৎপরতা` নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা সবসময় সতর্ক আছি। বিশেষ করে নিষিদ্ধঘোষিত যে সব দল আছে, সেসব দল যাতে কোনো রকম কার্যক্রম পরিচালনা না করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সদা সতর্ক।
জাতীয় ঈদগাহের ঈদ জামাত ঘিরে চারপাশে যান চলাচলের বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন সকাল ৬টা থেকে ঈদের নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে
ইএইচ