Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৪,

সিরাজদীখানে গরুর খামার করে সফল উদ্যোক্তা শিথুল হাওলাদার

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

জুন ২৭, ২০২২, ০৫:৩৩ পিএম


সিরাজদীখানে গরুর খামার করে সফল উদ্যোক্তা শিথুল হাওলাদার

গত ২ বছর আগে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে পড়ালেখার পাশাপাশি শিথুল হাওলাদার নামে এক শিক্ষার্থী শুরু করেন ছোট একটি গরুর খামার। প্রথমে ছোট পরিসরে ২১টি গরু দিয়ে শুরু করেন খামারটি। 

ধীরে ধীরে শথের ছোট গরু খামার থেকে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন মিথুন ডেইরি অ্যান্ড এগ্রো নামের একটি বড় খামার। শিথুল হাওলাদার উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ফুরশাইল গ্রামের বাসিন্দা এবং ষ্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ছাত্র। তিনি এখন বড় খামারী হিসেবে পরিণত হয়েছেন। বর্তমানে খামারে রয়েছে ৭০টি গরু।

খামার ঘুরে দেখা গেছে, দেশাল, জার্সি, শাহীওয়াল, ব্রাহামা, অস্ট্রেলিয়ান এসব গরু। উন্নতমানের শেটে রেখে গরুগুলোকে লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রতিটি গরুর মাথার ওপর ফ্যান রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে। মলমূত্র সহজেই পরিষ্কার করা যায়। 

জানা যায়, তার বাবা জুয়েল হাওলাদার একজন ব্যবসায়ী। করেনা দুর্যোগে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বাবার সহযোগিতায় ২০ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ছোট একটি খামার করে দেশি বিদেশী ২১ টি গরু নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ৭০ টি গরু। এর মধ্যে এবার কোরবানীতে বিক্রি করার উপযোগি রয়েছে ৫০ টি ষাড়। 

প্রতিটির ওজন ২০০ কেজি থেকে ৯০০ কেজি, যার মূল্য রয়েছে ৭০ হাজার টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত। ২৬ শতাংশ জায়গার ওপর খামারটিতে ২ টি শেডে রাখা হয়েছে গরু গুলো। এছাড়া ১৫ টি দুধের গাভিও রয়েছে তার খামারে। গত বছর কোরবানিতে ৪০টি গরু বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। শখের বশে ইউটিউব থেকে ধারণা নিয়ে এ খামার করেন। 

খামারের শ্রমীকরা বলেন, বিশেষ কৌশলে গরু পালন করায় এসব গরুর গোশত খুবই সুস্বদু হয়। সাধারণত উৎকৃষ্ট খৈল, ভূষি, খুদ ইত্যাদি খাওনো হয় এবং স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য গরু গুলোর ব্যাপক যত্ন নেওয়া হয়। এতে বাহ্যিক অবয়ব খুব তেলতেলে ও গোলাকৃতির হয়। গোশত হয় মোলায়েম।

শিথুলের বাবা মো. জুয়েল হাওলাদার বলেন, আমি খামারটা করি গত ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। এর কারণ হলো করোনার জন্য সবাই যার যার বাড়িতে শরীর সুস্থ থাকার জন্য বাড়িতে থাকতে হয়। বাংলাদেশ সরকারে নির্দেশ বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তাই আমার বাড়িতে থাকা অবস্থায় চিন্তা করলাম কি করা যায়। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম গরুর খামার দেওয়া যায়। 

এছাড়া আমার বড় ছেলের গরুর প্রতি আগ্রহ অনেক। তাই একটা ছোট পরিসরে খামার তৈরি করি। প্রথম বছর ১৭ টি,দ্বিতীয়বার ৪০ বিক্রি করে লাভবান হই। এবার ৫০টি গরু প্রস্তুত করছি।

উদ্যোক্তা শিথুল হাওলাদার বলেন, এবারের ঈদুল আযহায় ৭০ হাজার থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার মধ্যে আমার খামারে ৫০টি গরু বিক্রি জন্য প্রস্তুত করেছি। কয়েকটি বিক্রিও হয়েছে। দেশাল, জার্সি, শাহীওয়াল, ব্রাহামা, অস্ট্রেলিয়ান এসব গরু বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। থামাবে এসব গরু ১০ থেকে ১২ মাস লালন পালনের পর বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। মা বাবা দুজনেই গুরুত্ব দিয়েছেন আমার ইচ্ছাকে। তাই আমি আজ সফল উদ্যোক্তা।

উপজেলা প্রানী সম্পদ সমপ্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. সালাহউদ্দিন বলেন, শিথুল হাওলাদার একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। তিনি গত ২ বছর ২১ টি গরু দিয়ে একটি খামার শুরু করেন। গত কোরবানির ঈদে বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছে। এবছর তিনি প্রায় ৫০ টি গরু কোরবানীর ঈদের জন্য প্রস্তুত করেছেন। তাকে দেখে যুবসমাজ এগিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি। সবাইকে বলবো বাড়িতে একটি-দুটি করে পশু লালন-পালন করতে তবে বিপদে কাজে আসবে।

আমারসংবাদ/এআই 

Link copied!