শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
জুন ৩০, ২০২২, ০১:১৩ পিএম
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
জুন ৩০, ২০২২, ০১:১৩ পিএম
সাভারের আশুলিয়ার আলোচিত হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলছাত্র আশরাফুল আহসান জিতুকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব সদস্যরা।
বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের তার বন্ধু বশির শরিফের (১৮) বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বশির নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাইউসোনা গ্রামের বাসিন্দা। সে তার বড় ভাই ইমরান বিশ্বাস ও বড় বোন জিনিয়া আক্তারের সাথে থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকার এনআরজি স্পিনিং মিলস্ লিমিটেডে কারখানায় চাকরি করেন।
প্রায় দেড় মাস আগে ওই কারখানায় মেকানিক্যাল হেলপার পদে সে চাকরি নেয়। তার ভাই ও বোন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকে।
বশির জানান, আমি জিতুর সঙ্গে আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে একসঙ্গে পড়াশোনা করছি। জিতু আমার সহপাঠি বন্ধু ছিল। নবম শ্রেণি থেকে জিতুর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।
জিতু বুধবার (২৯ জুন) ভোরে তার নানার বাড়ি মানিকগঞ্জ থেকে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় এসে আমাকে ফোন করেন এবং তার বাড়িতে কয়েকদিন বেড়াবেন বলে তাকে জানায়।
পরে তাকে আমি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবাজারে আসতে বলি। সেখান থেকে জিতুকে বাসায় নিয়ে আসি। আমি বড় ভাই ও বোনের সঙ্গে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করি। এক ঘরে জায়গা না হওয়ায় জিতুকে পাশের সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া পরিচিত বড় ভাই সুজনের ঘরে থাকার ব্যবস্থা করি।
জিতু আমার এখানে আসার পরই জানায় তার বাবা বিকাশের মাধ্যমে এক হাজার টাকা পাঠাবে। তার বাবার পাঠানো টাকা উঠাতে দোকানে গেলে হঠাৎ র্যাব সদস্যরা তাদের পরিচয় দিয়ে আমাকে জিতুর ছবি দেখায়।
পরে জিতুকে চিনি বললে সে কোথায় আছে জানতে চান র্যাব সদস্যরা। আমি তাদের সুজনের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গেলে দেখি জিতু ঘুমিয়ে আছে। পরে র্যাব সদস্যরা সন্ধ্যায় ওই ভাড়া বাড়ি থেকে তাকে ডেকে তুলে নিয়ে যায়।
বশির শরিফ আরো জানান, জিতু বন্ধু হিসেবে আমার কাছে ভাল ছিল। নবম শ্রেণি পড়া অবস্থায় তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। তারপর থেকে সে আমার বন্ধু এবং একসাথে চলাফেরা করতাম আমরা। যেকোন বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসতো। জিতু শিক্ষককে পিটিয়ে পালিয়ে এখানে এসেছেন তা আমি জানতাম না।
বাড়ির মালিক সিদ্দিকুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার জিতুকে তারা কেউই চিনেন না। বুধবার সন্ধ্যার নামাজের আগে বাড়ির ভেতর হঠাৎই কিছু লোক এসে প্রত্যেক ঘরে তল্লাশি শুরু করে। এসময় ঘুম থেকে জিতুকে ডেকে তুলে তারা। পরে বাড়িতেই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হাতকড়া পড়িয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে শিক্ষক উৎপলকে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র জিতু।
পরে শিক্ষককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার (২৭ জুন) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সোয়া ৫টার দিকে তিনি মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষকের ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।