ফরিদপুর প্রতিনিধি
জুলাই ২৫, ২০২২, ০৬:০১ পিএম
ফরিদপুর প্রতিনিধি
জুলাই ২৫, ২০২২, ০৬:০১ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কোনো প্রকার ঘটনা ছাড়াই মিথ্যে গল্প রচনা করে একটি নিরীহ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ওই মামলাটি সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগ আলফাডাঙ্গা থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) সুমন বসাকের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের নিকট এমনটাই দাবি করেছেন হয়রানীর শিকার হওয়ার ভুক্তভোগী ওই পরিবারের সদস্যরা। এসময় ওই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সঠিক তদন্ত করার দাবী জানান।
এ অভিযোগটি উঠেছে আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া গ্রামের বাদশা কাজীর পরিবারের বিরুদ্ধে।
সরেজমিন ও আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই একই এলাকার বাসিন্দা আহম্মদ কাজী ও দিনো কাজীর পরিবারের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শত্রুতা পোষণ করে আসছে বাদশা কাজীর পরিবার। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ২৪ মে ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯নং আমলী আদালতে প্রতিপক্ষ বাদশা কাজী বাদী হয়ে ভয়ভীতি, মারপিট, স্বর্ণের চেইন, নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে আহম্মদ কাজী ও দিনো কাজীর পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটির তদন্ত ভার দেন আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশকে। থানা পুলিশের এসআই সুমন বসাক মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে ওই মামলার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পাঠান।
ওই মামলার আর্জিতে ঘটনার যে বিবরণ দেয়া হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে না গিয়েই আদালতে তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এমন হয়রানির বিচারের দাবি জানান।
সংশ্লিষ্ট এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহাদাৎ সরদার বলেন, মারামারি কিংবা ছিনতাইয়ের কোন ঘটনাই ঘটেনি। অকারণেই বাদশা কাজী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তার পরিবারের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও জামাতাকে স্বাক্ষী করেছেন। তার ছেলে-মেয়ে ও জামাতা তো এলাকায়-ই থাকে না। তারা থাকেন ঢাকা।
ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শামচুদ্দোহা, সাবেক পুলিশ সদস্য মতিয়ার রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শাহাবুল আলম তপুসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকায় এজাতীয় কোন ঘটনাই ঘটেনি। বাদশা কাজী তার মনগড়া ও কাল্পনিক কাহিনি সাজিয়ে আদালতে মামলা করেছেন। আলফাডাঙ্গা থানার এসআই সুমন বাসাক এলাকায় সরেজমিনে তদন্তে না এসেই মিথ্যা মামলার পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাদশা কাজীর বক্তব্য জানতে সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী সালকা বেগমের সাথে কথা হয়। এ সময় তিনি বলেন, আমরা সঠিক ঘটনা নিয়েই মামলা করেছি।
তবে এ অভিযোগের বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বসাক জানান, বাদীর আনিত স্বাক্ষীদেরকে জিজ্ঞেসাবাদ করি। ঘটনাটি আমি প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন তৈরী করে আদালতে প্রেরণ করেছেন। তবে প্রতিবেদনটি আসামিদের পছন্দ না হলে তারা আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।
কেএস