Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৪,

কাঁচা রাস্তা আর পাকা হয় না!

হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)

হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)

জুলাই ৩০, ২০২২, ০২:১৩ পিএম


কাঁচা রাস্তা আর পাকা হয় না!

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা বলাইশিমুল ইউনিয়নের অবহেলিত বলা হয় কামারগাঁও নামের গ্রামটিকে।
এই গ্রামের লোকজন জানান, গ্রামের প্রধান সমস্যা যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নেই। তাই গ্রামটি অবহেলিত। গ্রামটির সামনে রয়েছে একটি নেটিয়া হাওর যে কারণে প্রতিবর্ষায় গ্রামের রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। রাস্তায় কাঁদা মাটি লেগে থাকে সারাবছর।

তারা আরো বলেন, এই গ্রামের লোকজনের সাথে অন্য গ্রামের লোকজন সহজে আত্মীয় করতে চায় না।  কারণ হিসেবে যোগাযোগ ব্যবস্থার ভালো নেই বলেই অন্য গ্রামের লোকজন মুখ ফিরিয়ে নেন।

এই গ্রামে ভোটার সংখ্যা সাড়ে ৪শ, জনসংখ্যার তুলনায় শিক্ষার হার একদম কম। যদিও গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ, একটি নির্মাণাধীন মাদ্রাসা রয়েছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে সর্বোচ্চ ২০ জন মাধ্যমিক পাশ করেছে এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে ১০ জন। এদের মধ্যে রিমন, সালামুন, রাজু এই ৩ জন সরকারি চাকরিজীবী রয়েছে। তারাও তাদের গ্রামের বাহিরে থেকে লেখাপড়া করছেন বলে তাদের পরিবারের লোকজন জানান।

গ্রামের লোকজন বলছে, গ্রামের প্রবেশের কাঁচা রাস্তাটি পাশ্ববর্তী সরাপাড়া বাজার পাকা সড়ক হতে তাদের গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় সারাবছর কাদা লেগেই থাকে। বর্ষায় একমাত্র নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না। গ্রামের গবাদি পশুদের বাড়ির আঙ্গিনা ও বাড়ির ভেতরে রেখেই করতে হয় লালন পালন। সমস্যায় আছেন এ গ্রামের ছোট বড় মৎস্য চাষীরা।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের এমনি চিত্র কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান, নজরুল ইসলাম, আল আমিন সহ গ্রামের বেশ কয়েক জনের সাথে। তারা তাদের দুরদর্শার কথা তুলে ধরে দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কাছে দাবি জানান।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, গ্রামের কাঁচা রাস্তা পাকা করার মত ইউনিয়ন পরিষদের বাজেট নেই। তবে এই গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে তিনি বলবেন বলে জানান।  

শিক্ষার হার একদম কম এ বিষয়ে কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই গ্রামের ছেলে মেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়া করে পরে তারা লেখা পড়া করতে চায় না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নেই তাই হয়তো পড়ালেখা করতে চায় না।

কামারগাঁও গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ইমন, ৮ম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির, ৯ম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাকিম বলেন, ৪ কিলোমিটার দূরে পাশ্ববর্তী গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ি। এই ৪ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। গ্রামের রাস্তাটি নষ্ট থাকায় কাদা মারিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারি না। বৃষ্টি হলে স্কুলে যাওয়ার আর উপায় থাকে না।

এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, কামারগাঁও গ্রামের রাস্তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাবো। নির্দেশ পেলে ব্যবস্থা করা হবে।

আমারসংবাদ/এআই 

Link copied!