Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪,

নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, আতঙ্কে গ্রামবাসী

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

আগস্ট ৭, ২০২২, ১২:৪৩ পিএম


নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, আতঙ্কে গ্রামবাসী

গত কয়েকদিনে পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই পানি বৃদ্ধির কারণে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতোমধ্যে কয়েক দিনের ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধ শতাধিক বসতভিটা। যমুনার এমন ভাঙনে দিশেহারা পুরো গ্রামবাসী। হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী চিতুলিয়া পাড়া গ্রাম, নদী রক্ষা বাধঁ হিসেবে ব্যবহারের উচুঁ সড়ক সহ অসংখ্য স্থাপনা। গত কয়েক বছরের ভাঙনে যমুনা পূর্ব পাড়ের খানুরবাড়ি, বেপারি পাড়া, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকার হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি ও ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এদিকে চলতি বছরে বন্যার প্রথম ধাপে যমুনার পূর্ব পাড়ে বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেসময়  নিজেদের বসতভিটা রক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে প্লাস্টিকের বস্তা ফেলছে স্থানীয়রা। পানি কমে গেলে নদী ভাঙন কিছুটা কমে আসে। এ সময় তারা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানান। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গত কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।  

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী চিতুলিয়া পাড়া অংশে প্রায় ৫‍‍`শ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনের ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘর-বাড়ি। নিজেদের চোখের সামনেই বিলীন হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি। বুকফাঁটা আত্মনার্থ নিয়ে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে পরিবারের লোকজন। চোখ বেয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে এসব মানুষ। তাদের এই অসহায়ত্ব দেখার কেউ নেই। এরমধ্যে অনেকে তাদের ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। কারো কারো আসবাবপত্র সহ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ভাঙন কবলিত এলাকার আব্দুল কাদের বলেন, এবছর বর্ষা মৌসুমে আমার একটি ঘর নদীতে ভেঙে যায়। গত তিনদিন আগে আমার বাকি দুইটি ঘরও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় থাকবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি। আমার মতো আরো অনেকে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের এখানে জিও ব্যাগও ফেলত তাহলে আজকে আমরা মতো শত শত পরিবার নিঃস্ব হতো না।

চিতুলিয়া পাড়া গ্রমের শাজাহান মিয়া বলেন, আমার চোখের সামনেই আমার বসতভিটা ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিলনা। সকল কিছু নদীতে ভেসে গেছে। এখনো প্রতিদিন ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, এভাবে কয়েকদিন ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূঞাপুরের যমুনার পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া অংশে ভাঙনের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধে ঐ অংশে জিও ব্যাগ ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা কথা বলেছি।

কেএস 

Link copied!