Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪,

বরিশালে শিশুশ্রমে তৈরি হচ্ছে শিশুদের খাদ্য

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

আগস্ট ১২, ২০২২, ০৮:৫৬ পিএম


বরিশালে শিশুশ্রমে তৈরি হচ্ছে শিশুদের খাদ্য

বরিশালে নগরীর দপদপিয়া ফেরী ঘাট রোড সংলগ্ন দক্ষিণ রুপাতলী এলাকায় শিশুশ্রমে তৈরি হচ্ছে শিশু খাদ্য ট্যাংক, ঝালমুড়ি, স্যালাইন, চানাচুর। এসব খাদ্য তৈরীতে যে পরিবেশ থাকার কথা রয়েছে তা মানছেনা নাম বিহীন কোম্পানী গুলো। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সেখানে উল্লেখ রয়েছে কেউ যদি শিশু শ্রমিক নিয়োগ করে জরিমানা ও অর্থদণ্ড করা হবে। তবে কে মানে এই আইন।

নিজের আখের গোছানো জন্য  প্রতিনিয়ত অধিক লাভের আশায় শিশুদের দিয়ে নগরীতে করানো হচ্ছে কাজ। রাস্তায় চলতে পথে প্রায়ই চোখে পড়ে ছোট শিশুদের ভারী কাজ করার দৃশ্য। হোটেল থেকে শুরু করে লেগুনা হেলপার, বিভিন্ন কারখানায়, ইট কিংবা কনস্ট্রাকশনের কাজেও যুক্ত আছে শিশুরা। শিশুদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো নতুন নয়। তবে আইন করেই বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে শিশুশ্রম। তারপরও বরিশাল নগরীতে কমছে না শিশুশ্রম।

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এ শিশুদের ন্যূনতম বয়স ১৪ আর কিশোরদের বয়স ১৪-১৮ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ১৪ বছরের কম বয়সীদের কাজে নিয়োগ করা যাবে না। শিশুর অভিভাবক কাজ করানোর জন্য কারো সঙ্গে কোনো প্রকার চুক্তি করতে পারবেন না। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম। তবে শুধু বরিশালই নয় দেশের সব জায়গায়ই শিশুশ্রমের চিত্র দেখা যায়। এমনই একটি দৃশ্য চোখে পরলো নগরীর রুপাতলী এলাকায় সিদ্দিক মার্কেটিং প্রজেক্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠানে শিশু খাদ্য উৎপাদন করছে শিশুরা।

সরেজোমিনে গিয়ে দেখা যায়, দপদপিয়া ফেরী ঘাট রোড সংলগ্ন দক্ষিণ রুপাতলী এলাকায় শিশু কিশোর ও কিশোরীরা তৈরি করছে শিশু বান্ধব খাদ্য, ট্যাংক, ঝালমুড়ি, স্যালাইন, চানাচুর। এসব খাদ্য তৈরীতে যে পরিবেশ থাকার কথা রয়েছে তা সেখানে নেই বলেই চলে। স্থানীয়দের দাবী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে শিশুদের দিয়ে একটি চক্র নিজেদের আখের গোছানো জন্য শিশু খাদ্য তৈরী করেছে। যদি এদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে ভবিষ্যতে বড়ো ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সিদ্দিক মার্কেটিং প্রজেক্টের এর পরিচালকের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রবীন সাংবাদিক এ্যাড. এস.এম ইকবাল বলেন, শিশুদের শ্রমে নিয়োগ বে-আইনী এবং নিন্দনীয় কাজ।

শিশুশ্রম নিয়ন্ত্রণে সরকারি আইনের প্রয়োগ না থাকায় বরিশালে শিশুশ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইনের সঠিক প্রয়োগ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এবিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল জেলা সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শিশুশ্রম এটি একটি অপরাধ। কোন ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে শিশু দিয়ে কাজ করালে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ভাবে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করলে হয়তো শিশুশ্রম বন্ধ হতে পারে। এ ব্যাপারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বরিশালে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বা শিশু শ্রম বন্ধে তারা বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও মালিক পক্ষের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

তাদেরকে এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। উল্লেখ করে তিনি আমার সংবাদের প্রতিবেদককে বলেন, তারা এ পর্যন্ত বরিশাল নগরীতে অনেক শিশু শ্রমিক শনাক্ত করেছেন। যাদের মধ্য থেকে উদ্ধুদ্ধকরণের মাধ্যমে বিড়ি কারখানার, লেদ ওয়ার্কশপের, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ সহ বিভিন্ন বেকারীতে শিশু শ্রমিক নিরসন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এখনও তো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিশুশ্রম চলছে প্রশ্ন করলে তিনি প্রশ্নের জবাবে বলেন, শিশু শ্রম নিরুৎসাহিত করতে তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় সচেতনতামূলক উদ্ধুদ্ধকরণ সভা করা হয়। শিশু শ্রম বন্ধে আমরা যথেষ্ট আন্তরিক এবং সরকারেরও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। যা আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলেন তিনি জানা। তিনি আরো বলেন খুব শিঘ্রই আমরা শিশুশ্রম এর বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে অভিযান পরিচালনা করবো।

এবি

 

Link copied!