ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আগস্ট ১৮, ২০২২, ১১:৫৯ এএম
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আগস্ট ১৮, ২০২২, ১১:৫৯ এএম
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলতি বছরে যমুনা চরাঞ্চল সহ উপজেলায় পাট চাষের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। গত বছর ৪ হাজার ২`শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও এবছর আরো ৩`শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে চলতি বছরের বন্যায় উপজেলার যমুনা চরাঞ্চল বেষ্টিত গাবসারা ইউনিয়নের বেশ কিছু পাট পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে চরাঞ্চলের বেশ কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় এবছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণঅধিদপ্তর।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুরে দেখা যায়, উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকেরা কাক ডাক ভোর থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পাট বিক্রির জন্য বিভিন্ন হাটে নিয়ে আসতে শুরু করেন। সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যান। স্থানীয় হাটগুলোতে প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। ছবিটি বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসী হাট থেকে তোলা হয়েছে।
গাবসারা গ্রামের পাট চাষি মিনহাজ উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর আমাদের চরাঞ্চলে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। পাট আবাদে খরচ ও ঝুঁকি অনেক কম। এছাড়াও আমদের স্থানীয় হাটগুলোতে পাটের দাম মোটামুটি ভালো।
উপজেলার যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসী হাটে পাট বিক্রি করতে আসা কৃষক তারা মিয়া বলেন, আজকে গোবিন্দাসী হাটে পাটের বাজার মোটামুটি ভালো। আমি আজকে ১৪ মন পাট নিয়ে এসেছিলাম। প্রতি মন ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি। তবে এবছর পাটের বাজার ভালো পাওয়ায় আমি খুশি।
তারা মিয়ার মতো পাট বিক্রি করতে আসা কৃষক আমজাদ আলী বলেন, আজকে আমি ৯ মন পাট হাটে নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে একটু নিম্ন মানের ৩ মন পাট বিক্রি করেছি ২ হাজার ৮`শ টাকা করে এবং বাকি ৬ মন ভালো মানের পাট বিক্রি করেছি ৩ হাজার ১`শ টাকা করে। এছব পাট আবাদ করে আমরা অনেকটা লাভবান হয়েছি।
হাটে আসা পাটের পাইকার (ক্রেতা) জুয়েল রানা বলেন, পাটের আরোদ মালিদের রেটে বিভিন্ন হাট থেকে আমরা পাট কিনছি। বর্তমানে আমরা ভালো মানের প্রতি মন পাট ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং একটু নিম্ন মানের পাট ২ হাজার ৭`শ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনতেছি। তবে যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসীর এই হাটটিতে ভালো মানের পাট বেশি আমদানি হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ুন কবির দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর যমুনা চরাঞ্চল সহ উপজেলায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পাটের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদেরকে মাঠদিবস ও বিভিন্ন পরামর্শ সহ বিনামূল্যে সার ও বীজ দিয়েছি। আমাদের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে নিয়মিত পরিদর্শন ও কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। এ বছর উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৫৮৯ বেল। এ বছর পাটের দাম ভালো হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে পাটের আবাদ হবে বলে আশাবাদী।
কেএস