Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

বিএনপি-জামায়াতের কাছে যাপিত জীবনের কোন সমাধান নেই: ইনু

বরিশাল ব্যুরো

বরিশাল ব্যুরো

আগস্ট ২০, ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম


বিএনপি-জামায়াতের কাছে যাপিত জীবনের কোন সমাধান নেই: ইনু

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, দেশের সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি এই মুহুর্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণণ বিপদের সম্মুখহীন। একদিকে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মুখোশ পড়া বিএনপি আসলে একটি সাম্প্রদায়িক তালেবানি চক্র, অপরদিকে ধর্মের মুখোশ পড়া জামায়াত ইসলামী, রাজাকার, হেফাজত জঙ্গীরা হচ্ছে তালেবানি চক্র। সুতরাং এই দুই চক্রের মিলনে বাংলাদেশে অস্বাভাবিক একটি সরকার প্রতিষ্ঠার পায়তারাটা রাষ্ট্রের জন্য দেশের জন্য হুমকি স্বরুপ। 

শনিবার (২০ আগস্ট) বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাসদের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি  আরও বলেন, আমি মনে করি এই মুহুর্তে রাজনীতিতে সবথেকে বড়  হুমকি হচ্ছে একটি বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত জঙ্গীদের মিলিত এই চক্র দেশের যাপিত জীবনের সমস্যাকে পুজি করে ঘোলা পানিতে ক্ষমতা দখলের চক্রান্তে লিপ্ত থাকাটা। আরেকটা বিপদ হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবাজ এবং বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজির। যারফলে বাজারে যে অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থীতিশীলতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দুর্নীতিবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসারির ফলে অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে একদিকে।

আরেকদিকে এই সুযোগে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত জঙ্গীরা তালেবানি শাসন কায়েম করার জন্য একটি অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। এই দুই বিপদকে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে হলে দুর্নীতিবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি কঠোর ভাবে দমন করতে হবে যেভাবে, ঠিক তেমনি কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক সরকারের মাধ্যমে তালেবানি শাসন কায়েম করার চক্রান্ত করতে দেয়া যায় না।

হাসানুল হক ইনু বলেন, সংকটের কথা বলুন আর ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলুন এসবের ফলে একটা প্রভাব পড়ছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের যাপিত জীবনে প্রভাব পরেছে।কিন্তু করোনাকালে এই সরকার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে সফল হয়েছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের অর্থনীতির সেই শক্তি আছে, যাতে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশিক সংকট মোকাবেলা করতে সক্ষম। সমস্যা বাধিয়েছে দুর্নিতীবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। যা বাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এরা আসলে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও অর্থনীতির জন্য মহা হুমকিশরুপ। সুতরাং বাজার সিন্ডিকেটের অভ্যন্তরীন সমস্যা, দুর্নিতীবাজদের এই কারসাজির সমস্যাটা মোকাবেলা করতে পারলেই আমরা যাপিত জীবনের এ সমস্যাটা সমাধান করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি জনগনের সমস্যা সমাধান করার কথা আর বিএনপি-জামায়াত চক্র তারা জনগনের সমস্যাকে পুজি করে ঘোলা পানিতে একটি অস্বাভাবিক সরকার কায়েমের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আফগানিস্তানের পথে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত করছে। আমরা যেরকম সমাধান দেই, বিএনপি জামায়াতের কাছে যাপিত জীবনের কোন সমাধান নেই, প্রস্তাবও  নাই। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চক্রান্তে লিপ্ত আছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এসময় তিনি জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, দ্রব্যমূল্যের সমস্যা, ডিজেলের সমস্যাসহ যাপিত জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিবো, অপরদিকে আপনারা অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত থেকে বাংলাদেশেকে রক্ষা করবেন।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদি, রাজাকার, হেফাজতী চক্র সামরিক শাসকের হাত ধরে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে পাকিস্তানপন্থা সাম্প্রদায়িকতার পথ থেকে অসাম্প্রদায়িকতার পথে টেনে তোলার চেষ্টা করছি। এখন আমরা মাঝপথে আছি। এখনও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে, সমাজ অঙ্গণে এই জামাতি তেতুল হুজুররা, রাজাকার জঙ্গীবাদিরা চক্রান্ত করে চলেছে গোপনে এবং প্রকাশ্যে। এদের সঙ্গে এখন বহুতজনা ক্ষমতার স্বার্থে, ভোটে জেতার স্বার্থে দহরম-মহরমকরছে এবং প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য আতাত করে চলছে। এটা জাতীয় রাজনীতির জন্য হুমকিশরুপ এবং দুঃখজনক। তবে জাসদ মনে করে অসাম্প্রদায়িকতা ছাড়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশিলতা আসবে না এবং উপমহাদেশে শান্তিও আসবে না। সুতরাং অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষেই দাঁড়াতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক রাজাকার চক্রকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করে বিদায় জানাতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা তো সামরিক শাসন, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গীবাদি রাজনীতি থেকে গণতন্ত্রের পথে সংবিধানের পথে যাচ্ছি এবং আমাদের সংবিধান মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে। আমদের সংবিধান বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড স্বীকার করে না, আমাদের সরকারও স্বীকার করে না। সুতরাং জাতিসংঘের প্রতিনিধি মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে যে কথা বলেছে, আমরাও তো তার পক্ষে। আমাদের সাথে তো ওনার কোন বিরোধ নাই। এখন সেই মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কতটুকু সফল কতটুকু ব্যর্থ সেটা আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করবো। সুতরাং যারা মনে করছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের সরকারের কার্যকলাপে সন্তুষ্ট কি অসন্তুষ্ট কিনা এবং এটা নিয়ে সরকার অদল-বদলের খেলা খেলবেন। আমি মনে করি তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জাতিসেংঘের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নীতিগত কোন পার্থক্য নেই। যেহেতু নীতিগত কোন পার্থক্য নেই সুতরাং আমরা মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কোন জায়গায় ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে সেগুলো আমরা সংশোধন করবো। আর সংশোধন করেই চলছি এটা কোন সমস্যা না।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার-এমপি।

কেএস 

Link copied!