Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

এমএলএম কোম্পানী খুলে প্রতারণা, ৮ জনকে গ্রেপ্তার

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া

আগস্ট ২৭, ২০২২, ০৪:০৯ পিএম


এমএলএম কোম্পানী খুলে প্রতারণা, ৮ জনকে গ্রেপ্তার

সানরাইজ বিজনেস সার্ভিস লিঃ (এসবিএসএল) নামের একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানীর চেয়ারম্যানসহ ৮ প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব সদস্যরা। এই প্রতারক চক্রটি অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় এবং ৩শ পরিবারকে সর্বশান্ত করে পথে বসিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কুষ্টিয়া ছাড়াও উক্ত কোম্পানীর প্রতারণার বিস্তৃতি ছিল ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী জেলা পর্যন্ত। প্রতারণার জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট ও মোবাইল এপ্লিক্যাশন তৈরি করে গ্রাহকদেরকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে ১২শ টাকা দিয়ে কোম্পানীর আইডি খুলতে বলা হতো। প্রতি আইডি থেকে প্রতিদিন ১০ টাকা ও আইডি বাবদ প্রদানকৃত ১২শ টাকার সমমূল্যের পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হতো। শুরুর দিকে কিছু গ্রাহক টাকা ও পণ্য পাওয়ার কারণে অনেকেই আইডি খুলতে উৎসাহিত হয়েছিল। একসময় গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে আত্মগোপনে চলে যায় প্রতারক চক্র। লগ্নিকৃত টাকা হারিয়ে শত শত গ্রাহক দিশেহারা হয়ে পড়ে।

উক্ত প্রতারণার প্রেক্ষিতে একজন ভুক্তভোগী গ্রাহক গত ২৬ আগস্ট ২০২২ তারিখ উক্ত কোম্পানীর চেয়ারম্যান সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করে, যার মামলা নং-৩৫, ধারাঃ দন্ডবিধি ৪০৬/৪২০/৩২৩/৩০৭/৫০৬। এছাড়াও উক্ত প্রতারণার ঘটনাটি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে, প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তারে র‌্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।

র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া শনিবার (২৭ আগস্ট) সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প, র‌্যাব-১২ এর একটি আভিযানিক দল র‌্যাব সদর দপ্তর এর গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় গত ২৬ আগষ্ট ২০২২ তারিখ রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে উক্ত এমএলএম কোম্পানীর প্রতারক চক্রের ৫ জন সদস্য মোঃ হাসান আলী (২৮), পিতা-জলিল বিশ্বাস, সাং-বেতবাড়িয়া, মোঃ আব্দুল হান্নান (৪৩), পিতা-মৃত আমজাদ হোসেন, সাং-মহেন্দ্রপুর, মোঃ মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭), পিতা-মৃত লিয়াকত আলী, সাং-ওয়াশী, মোঃ আইয়ুব আলী (২৮), পিতা-মৃত আলাউদ্দিন বিশ্বাস, সাং-বাঁশগ্রাম এবং মোঃ হাফিজুর রহমান (২৮), পিতা-মৃত আলতাফ শেখ, সাং-বহলবাড়িয়া, থানা-কুমারখালী, জেলা-কুষ্টিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যমতে উক্ত কোম্পানীর চেয়ারম্যান মোঃ সাজ্জাদ হোসেন (২৯), পিতা-মোঃ মনিরুল ইসলাম, সাং-চরআউশিয়া, থানা-শৈলকুপা, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মহসীন আলী (৩১), পিতা-আব্দুল গফুর, সাং-পদ্মপুকুর, থানা-মহেশপুর, উভয় জেলা-ঝিনাইদহ, এবং ফিন্যান্স ডাইরেক্টর মোঃ ইমরান হোসেন (২৮), পিতা-মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন, সাং-গোবরা, উপজেলা  কুমারখালী, জেলাঃ কুষ্টিয়াকে ঢাকার মিরপুর এলাকা হতে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা উক্ত প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

উক্ত এসবিএসএল কোম্পানীর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর ও কুমারখালী থানায় ২টি মামলা রয়েছে, যার মামলা নং-২০, তারিখঃ ১৩ জুন ২০২২, মিরপুর থানা এবং মামলা নং-৩৫, তারিখঃ ২৬ আগস্ট ২০২২, কুমারখালী থানা।

এছাড়া কোম্পানীর চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন এর বিরুদ্ধে ২টি চেক জালিয়াতির মামলা, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মহসিন আলীর বিরুদ্ধে ১টি চেক জালিয়াতি ও ৫টি স্ট্যাম্প জালিয়াতির মামলা এবং ফিন্যান্স ডাইরেক্টর ইমরান হোসেন এর বিরুদ্ধে ২টি চেক জালিয়াতির মামলা রয়েছে।

কেএস

Link copied!