সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৮:৫৩ পিএম
পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আজও ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উদ্ধার মরদেহগুলোর মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার আত্রাই নদীর জিয়া সেতুর নিচ থেকে ৮ জনের, বোদায় ১৫ জনের ও দেবীগঞ্জে ২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ৪০ জনের নিখোঁজের তথ্য আছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়।
তিনি জানান, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নৌকাডুবিতে ৫০ যাত্রীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শেখ মাহবুব ইসলাম জানান, গতকাল ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধারের পর রাতে নদীতে তল্লাশি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। সোমবার ভোর থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। রাজশাহী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম থেকে আসা ডুবুরি দলও এখন অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
বোদা থানার ওসি সুজয় কুমার রায় দুপুরে বলেন, স্রোতের টানে হয়তো অনেক মরদেহ আশপাশের নদীতে ভেসে গেছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপর পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণ ক্ষমতার নৌকাটিতে দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। মনে করা হচ্ছে স্রোতের কারণে অনেক মরদেহ পানিতে ভেসে যেতে পারে।
এদিকে, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আমরা সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে যাই। গভীর রাত পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলে। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত মৃতরা হলেন- শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), পিয়ন্ত (২.৫), রুপালী ওরফে খুকি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী (৭০), জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সনেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), হাশেম আলী (৭০), বিলাস চন্দ্র (৪৫), শ্যভমলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়শী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০) ও ব্রজেন্দ্রনাথ (৫৫)।