Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

নুর হাকিম আনোয়ার, টেকনাফ

নুর হাকিম আনোয়ার, টেকনাফ

অক্টোবর ২, ২০২২, ০৪:৪৩ পিএম


টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

মৌসুম শুরু হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নাব্যসংকটের কথা বলা হলেও এ সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমার অংশে উত্তেজনা। মিয়ানমারের সম্ভাব্য মর্টার শেল থেকে পর্যটকদের নিরাপদে রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পর্যটন মৌসুম শুরু হয় ১ অক্টোবর থেকে। মার্চ পর্যন্ত দ্বীপটিতে পর্যটকরা যেতে পারেন। মৌসুম শুরু হলে টেকনাফ থেকে সাতটি প্রমোদতরী এবং ৩০টির বেশি কাঠের ট্রলারে সেন্টমার্টিন যাওয়া-আসা করেন দৈনিক প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার পর্যটক।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এরফানুল হক চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মিয়ানমারের সৃষ্ট সমস্যার কারণে নাফনদী দিয়ে চলাচলকারী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।

তিনি আরও বলেন, নাফ নদীতে নাব্যসংকট থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটক চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন এবং চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটক চলাচল অব্যাহত থাকবে।

সীমান্তের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি যেকোনো সময় খারাপ হতে পারে। অথবা মিয়ানমারের একটা গোলা বা মর্টার শেল পর্যটকবাহী জাহাজে এসে পড়তে পারে। এ কারণে মূলত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাফ নদী দুই দেশের মধ্যে সীমানা হিসেবে কাজ করছে। এই নদীর ৭ কিলোমিটার অভিন্ন নৌপথ পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে যেতে হয়।

এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তে এবং দুই দেশের শূন্যরেখায় সম্প্রতি কয়েক দফা মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে মিয়ানমার। এতে একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। দফায় দফায় প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে দ্বীপের প্রবাল, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্য প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। পর্যটকরা গভীর রাত পর্যন্ত সৈকতে উৎসব করেন। তাদের গানবাজনা ও কোলাহল বেড়ে যাওয়ায় গভীর সমুদ্র থেকে তীরে কচ্ছপ ছুটে আসা অনেক কমে গেছে। দ্বীপের ১০৬টি হোটেল-মোটেলের পয়োবর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। হোটেলের বর্জ্য সরাসরি চলে যাচ্ছে সমুদ্রে। এতে সমুদ্রের স্বচ্ছ নীল পানি ঘোলাটে হচ্ছে। জাহাজ ও ট্রলারের পাখার কারণে সমুদ্রের তলদেশের বালু পানিতে মিশে প্রবালের ওপর জমে আস্তরের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে অনেক এলাকার প্রবাল মরে গেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর সম্প্রতি সেন্টমার্টিন থেকে বিপুল পরিমাণ পলিথিন, নৌকার মাছ ধরার জাল, প্লাস্টিক বোতল, ক্যান ও সিগারেটের উচ্ছিষ্ট উদ্ধার করেছে।

কেএস 

Link copied!