Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

গাইবান্ধায় সাত শিক্ষকের নামে জালিয়াতি মাধ্যমে ঋণ উত্তোলন!

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

অক্টোবর ৩, ২০২২, ০৫:৫৬ পিএম


গাইবান্ধায় সাত শিক্ষকের নামে জালিয়াতি মাধ্যমে ঋণ উত্তোলন!

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত সহকারী শিক্ষকের সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ, অবসরভাতা) ফান্ড থেকে জালিয়াতি মাধ্যমে ৯ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সুন্দগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। গেল বছরের ডিসেম্বরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের যোগসাজশে সাত শিক্ষকের বিপরীতে এই টাকার ঋণ উত্তোলন করেন আবু বক্কর।

এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই সাত শিক্ষক। এছাড়া এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়ে গত রোববার করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন। উপজেলা প্রশাসন বরাবর দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপিও।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর করা ওই লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী, রহিমা বেগম, আতাউর রহমান, শামছুন্নাহার বেগম, মাসুদা  বেগম, হাজেরা বেগম ও আনিছুর রহমানসহ এই সাত শিক্ষক ঋণের জন্য কখনো আবেদন করেনি। অথচ তাদের নামের বিপরীতে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের সুন্দরগঞ্জ এবং পাঁচপীর শাখা হতে সর্বনিম্ন ৬৬ হাজার টাকা থেকে সর্ব্বোচ্চ ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা সহ মোট ৯ লাখ ১৯ হাজার উত্তোলন করা হয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে এই টাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু বক্কর সিদ্দিক তুলে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এছাড়া এই জালিয়াতির সাথে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন-উর-রশিদকসহ হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মচারী জড়িত থাকার অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।

দক্ষিণ ধোপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপ্না রানী রায় অভিযোগ করে বলেন, ‍‍`গত ৪ সেপ্টেম্বর আমার একাউন্ট থেকে ১৩ হাজার ২০০ টাকা কর্তন করা হয়। পরে ট্রেজারি অফিসে গিয়ে দেখি আমার জিপিএফ ফান্ড থেকে ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। অথচ এই ঋণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।‍‍` আমি ঋণের জন্য কখনো আবেদনও করিনি কিংবা কোথাও স্বাক্ষরও করিনি।

এদিকে, শিক্ষকদের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের টাকা উত্তোলনের ঘটনা জানা নেই বলে দাবি সংশ্লিষ্ট শাখার ব্যাংক কর্মকর্তাদের। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগও করেনি বলে জানান দুই ব্যাংক কর্মকর্তাই। অপরদিকে ঘটনা জানজানির পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত অফিস সহকারী আবু বক্কর সিদ্দিক। অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এসব বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন-উর-রশিদকে। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে শিক্ষকদের নামে জালিয়াতি করে ঋন উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় কম্পিউটার অপারেটর আবু বক্করের উপরে দোষ চাপানেরও চেষ্টা করেন তিনি।

এসব বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ আমার সংবাদকে বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।‍‍`

এআই 

Link copied!