Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে বুথে প্রবেশের অভিযোগে মামলা, কারাগারে যুবক

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

অক্টোবর ১৩, ২০২২, ০৬:৫১ পিএম


নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে বুথে প্রবেশের অভিযোগে মামলা, কারাগারে যুবক

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে আইনভঙ্গ করে, অনধিকার পূর্বক কেন্দ্রের বুথে প্রবেশ করে ভোট ডাকাতির অভিযোগে সুজন মিয়া (৩৫) নামে এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বিষয়টি বেলা আড়াইটার দিকে আমার সংবাদকে নিশ্চিত করেন সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রজব আলী। এরআগে গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে ভোট চলাকালীন সময় সাঘাটা উপজেলার পদুমশহর ইউনিয়নের সন্যাসদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (কেন্দ্র নম্বর-৬০) থেকে তাকে গ্রেপপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সুজন মিয়া টেপা পদুমশহর গ্রামের সাহিদুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ জানায়, বুধবার গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন চলাকালে উপজেলার পদুমশহ ইউনিয়নের সন্ন্যাসদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করে কেন্দ্রের বুথে প্রবেশ করে সুজন মিয়া। পরে সেখানে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে ভোট মেরে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এসময় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মাজেদুল তাকে বাঁধা দিলে তার সাথে তর্কে জরান সুজন। পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে খবর দিলে তাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনা ওইদিন রাতেই অনধিকার পূর্বক কেন্দ্রের বুথে প্রবেশ করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম। মামলা একমাত্র আসামী করা হয় সুজন মিয়াকে। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সাঘাটা) বিচারক ফারুক হোসেনের আদালতে তোলা হলে তিনি তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এরআগে গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে  জালিয়াতির মাধ্যমে গোপন কক্ষে একজনের পরির্বতে আরেকজন ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রথমে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় ও রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও  ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সহ তিনটি ভোট কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়।

পরে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র দখল, অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়াসহ ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ না থাকার অভিযোগে সাঘাটা উপজেলার বগারভিটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে জাতীয়পার্টিসহ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের ভোট বর্জনের ঘোষণার বিষয়টি স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদের ফেসবুক আইডি "নিশাদ ভাইয়ের সমর্থক গোষ্টি" থেকেও লাইভে প্রচার করা হয়।

এরপর কয়েক দফায় ১৪৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৫১ টি কেন্দ্রের ভোট একই অভিযোগে স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও কেন্দ্র দখলসহ নানা অভিযোগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বন্ধ ঘোষনা করেন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের পরপরই এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় আ.লীগ ও নৌকার সমর্থকরা। পরে এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিকেল ৫টায় সাঘাটা উপজেলা আ.লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন আ.লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের মাহমুদ হাসান রিপন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে যে সকল কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে অবিলম্বে সেই সকল ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা এবং যে সকল কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রাখা হয়েছিল সে সকল কেন্দ্রে পূনরায় ভোট গ্রহণের আহবান জানান।

এছাড়া বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১২ টার দিকে এই উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও সিইসির শাস্তির দাবি জানিয়ে  ফুলছড়িতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

কেএস 

Link copied!